শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সিদ্ধান্ত মতে চলতি বছর প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার। ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপটিতে আর কোন পর্যটক ভ্রমনে যেতে পারবেন না। টানা ৯ মাস পর আগামি নভেম্বরে আবারও যেতে পারবেন পর্যটকরা। তবে নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রি যাপনের কোন অনুমতি নেই। রাত্রি যাপন করা যাবে শুধু মাত্রা ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই ২ মাস।
ফলে শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি শেষ হওয়া সময়সীমা ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে দ্বীপবাসী। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন স্টেশনে দ্বীপবাসীর উদ্যোগে এ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচীতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় হোটেল-মেটেল ও কটেজ মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার-টুয়াক, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, ট্রলার মালিক সমিতি, স্পিডবোট মালিক সমিতি, ভ্যান গাড়ী মালিক-শ্রমিক সমিতি এবং বাজার ব্যবসায়ি সমিতিসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কয়েক শত লোকজন অংশগ্রহণ করেছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, চলতি পর্যটন মৌসুমে সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে পর্যটক যাতায়ত সীমিত থাকায় এমনিতেই দ্বীপবাসী নানা সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এতে আগামী বর্ষা মৌসুমে দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে। তার উপর দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষা করে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সরকারি নির্দেশনা বহাল রাখায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে দ্বীপবাসী।
সমাবেশে বক্তারা দ্বীপবাসীর প্রাণের দাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, দ্বীপবাসীর জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে সরকার যেন অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসে যেন জাহাজ চলাচল চালু রেখে পর্যটক যাতায়তে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সেন্টমার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলোত্তর পথসভায় বক্তব্য রাখেন, টুয়াক এর সদস্য আকতার নুর, আইনজীবী ও সমাজকর্মি কেফায়েত উল্লাহ খান, স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মি নুর মোহাম্মদ, সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ খান ও হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ি জালাল উদ্দিন প্রমুখ।
এ নিয়ে টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি আমি শুনেছি। পযটন মৌসুমে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখানকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য মানববন্ধন করেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি সকলকে অবহিত করা হয়েছে।
গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। সিদ্ধান্ত নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। ফেব্রুয়ারি থেকেই বন্ধ থাকবে পর্যটকের দ্বীপ ভ্রমণ।
সিদ্ধান্তের আলোকে ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ হাজার পর্যটক ভ্রমণের সীমাবদ্ধ মেনে চলার শর্তে কক্সবাজার শহর থেকে দ্বীপে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছিল বলে জানিয়েছেন সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।
তিনি বলেন, অনুমতি পাওয়া জাহাজ সমুহ ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপে যাবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে যাবে না।
এদিকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ. ন. ম. হেলাল উদ্দিন উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। গত ২৮ জানুয়ারি দিন ধার্য থাকলে ওই রুটের শুনানী অনুষ্টিত হয়নি। তবে আদালত পরবর্তীতে শুনানীর জন্য আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করছেন।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply