বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে বাবাকে না পেয়ে স্কুল শিক্ষার্থী ছেলেকে আটকের পর কারাগারে পাঠানো মামলা থেকে জামিন পেয়েছে সেই শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মজিদের আদালত এ আদেশ দেন বলে জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ ইউনুছ।
জামিনপ্রাপ্ত ওই শিক্ষার্থী টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তাউসিফুল করিম রাফি। তার বাবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং উপজেলা যুবলীগের সদস্য রেজাউল করিম।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মামলার আসামি স্কুলছাত্রের আইনজীবীরা আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালতে আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানী করেন। এতে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে আদালত আসামির বয়স ও চলমান বার্ষিক পরীক্ষার সময়সূচী বিবেচনায় স্থায়ী জামিন আদেশ দেন।
এদিকে পুলিশের অভিযানে বাবাকে না পেয়ে কিশোর ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে অভিযোগে বুধবার হাইকোর্টে আইন ও শালিস কেন্দ্রের পক্ষে একটি রিট আবেদন করা হয়।
এ নিয়ে পিপি মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, আদালতে ওই রিট আবেদন আমলে নিয়েছেন। পরে শুনানীতে স্কুলছাত্রের জামিন এবং টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাপারে নিজের আইনগত অবস্থানের বক্তব্য উপস্থাপনের আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৯ নভেম্বর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানিয়েছিলেন, “২৬ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়। সেই সময় একটি বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে দুইজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একজনকে আটক করা হয়। পরে তার হাতে থাকা একটি নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভেতর একটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি গুলি এবং ৪০টি নীল রংয়ের কার্তুজ পাওয়া যায়। পরে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তা জব্দ করা হয়। অস্ত্রটি ওই কিশোরের বাবা তাকে পাশের বাড়ির পেছনে লুকিয়ে রাখার জন্য দিয়েছিলেন। কিশোরের বাবা সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায় জড়িত।
এ ঘটনায় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। “
কিন্তু শিশুর পিতা রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, মুলত রাজনৈতিক এবং নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে না পেয়ে আমার শিশু পুত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়েছে। তৌসিফুল করিম রাফি খুবই মেধাবী। সে ২০২১ সালে হ্নীলা প্রি ক্যাডেট স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে ড. গাজী কামরুল ইসলাম বৃত্তি লাভ করে। ২০২১ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে হ্নীলা একাডেমি বৃত্তি ও ২০২২ সালে ৫ম শ্রেণীতে জি এইফ এইচ বৃত্তি পায়। চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় আমার পুত্র অংশ নিতে পারলো না।
তিনি এ মামলার সাক্ষি প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার ও মৌলভী জামাল হোসাইনের সাথে আলাপ করার কথা বলে ছিলেন।
মামলার সাক্ষি প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার বলেন, ওই দিন মধ্যরাতে পুলিশ তার ঘরে ঢুকে। কোন কথা না বলে ঘরের আলমারী খুলে তকি যেন খুজতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার আলমিরাতে অস্ত্র পেয়েছে বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়।
অপর সাক্ষি মৌলভী জামাল হোসাইন বলেন, ভোরে মসজিদের যাত্রা দেয়া পথে পুলিশের ওসি তাকে দাঁড় করান। ওই সময় রেজাউলের ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করতে দেখেন। ওসি তাকে জানান অস্ত্র সহ শিশুটিকে আটক করেছে। এরপর এটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। এটা মামলার সাক্ষি কিনা জানিনা।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply