বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডাকাতের ছুরিকাঘাত সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছরোয়ার নির্জন হত্যার ঘটনায় ডাকাত দলের নেতৃত্বদানকারি ডাকাত সর্দার হেলাল উদ্দিন সহ ৬ জনকে ইতিমধ্যে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আটক ডাকাত সর্দার হেলাল উদ্দিন চকরিয়ার ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব ডুমখালী এলাকার জাফর আলমের ছেলে। যার বিরুদ্ধে ৪ টি হত্যা মামলা সহ ১৮ টির বেশি মামলা রয়েছে। মাত্র ১ মাস ১১ দিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে কারা মুক্ত হয়ে ডাকাতির ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে হেলাল। তার সাথে ডাকাতিতে অংশ নেয়া আরও ৫ সহযোগির নাম ইতিমধ্যে পেয়েছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। যে ৫ সহযোগি মাত্র ১১ দিন আগে জমিনে কারা মুক্ত হয়ে ডাকাতিতে অংশ নিয়েছে। যৌথ বাহিনীর সদস্য সেই ৫ সহযোগি সহ ডাকাতিতে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সোমবার মধ্যরাতে ডুলহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তির বাড়ীতে ডাকাতির সংবাদ পেয়ে যৌথবাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে আহত হন লেফটেন্যান্ট তানজিম। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে মালুমঘাট খ্রিস্ট্রান মেমোরিয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে রামুর সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করেন।
নিহত লেফটেন্যান্ট তানজিম টাঙ্গাইল জেলার বিন্দুবাসিনী গ্রামের ছেলে। তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপনান্তে ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে ২০২২ সালের ৮ জুন আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করে।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটকের তথ্য জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। আটকরা হলেন, আটকদের মধ্যে হেলাল ছাড়া আরও ৩ জনের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে। এরা হলেন মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাত দলের পাহারাদার হিসেবে পরিচিত জিয়াবুল হক ও তাঁর ভাগ্নি জামাই দিনমজুর মোহাম্মদ হোসেন এবং ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বেলাল। উদ্ধার করা হয়েছে ১টি দেশিয় তৈরি বন্দুক, ৬ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
চকরিয়া থানার ওসি মো : মনজুর কাদের ভূঁইয়া জানিয়েছেন ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। একই সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে আটক হেলাল উদ্দিনের নামে ১৮ টির বেশি মামলা থাকার তথ্য পেয়েছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল ৫ সহযোগির নাম পরিচয় প্রকাশ করেছেন। হেলাল ও তার ৫ সহযোগি সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
আদালত, কক্সবাজার জেলা কারাগার ও যৌথ বাহিনীর সদস্যদের দেয়া তথ্য বলছে হেলাল উদ্দিন জামিনে মুক্ত হয়েছেন ১ মাস ১১ দিন আগে ১৪ আগস্ট। চকরিয়া থানার ১২৭/২০ এসটি ৮৩/২৪ নম্বর মামলা থেকে জামিনে কারা মুক্ত হন তিনি। তার অপর ৫ সহযোগি পূর্ব ডুমখালী এলাকার করিমুল্লাহ, আবু বক্কর, শাহাব উদ্দিন ও আজিজুল ইসলাম জামিনে কারা মুক্ত হয়েছেন ১১ দিন আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে হেলাল ও ৫ সহযোগি কারামুক্ত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. শাহ আলম খান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, ডাকাতের হামলার শিকার হওযা রেজাউলের প্রতিবেশি জিয়াবুল। মূলত জিয়াবুল গ্রামবাসীর তথ্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অবস্থান সম্পর্কে ডাকাতদলকে অবহিত করে। সোমবার ভোরের ডাকাতিতে ইনফরমার হিসেবে কাজ করেছে জিযাবুল। আর জিয়াবুলের ভাগ্নি জামাই হোসাইন পেশায় দিনমজুর। এছাড়া অপর আটক বেলাল স্বশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্য।
এলাকাবাসি বলছেন চকরিয়া উপজেলার ৬ টি গ্রাম ঘীরে ৩ শতাধিক ডাকাত দলের সদস্য সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে ডাকাত প্রবণ এলাকা ডুলহাজারার ইউনিয়নের মাইজপাড়া. ডুমখালী, রিজার্ভ পাড়া, চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সাওদাগরপাড়া, শাহারবিল ইউনিয়নের পূর্ব পাড়া ও পশ্চিম পাড়া। যেখান প্রতিনিয়তই ডাকাতি সংঘটিত হচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, নিহত সেনা কর্মকর্তার মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে হেলিকাপ্টার যোগে টাঙ্গাইলে নিযে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জড়িতদের যেন কোনভাবে আটকের চেষ্টা চলছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply