শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারীদের হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার যুবক ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার সদরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আখতার জাবেদের আদালত এ আদেশ দেন বলে জানান, কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) মো. মছিউর রহমান।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২২) চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার বড় হাতিয়া ইউনিয়নের চুনতি এলাকার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সাথে কক্সবাজার শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় থাকেন।
মছিউর রহমান বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারীদের হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত রোববার ( ১৫ সেপ্টেম্বর ) আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এসময় আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে মঙ্গলবার শুনানীর দিন ধার্য করেন।
“ মঙ্গলবার বিকালে শুনানীর ধার্য দিনে আদালত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন। “
পরিদর্শক ( তদন্ত ) বলেন, গ্রেপ্তার আসামি এখন কারাগারে রয়েছে। পরবর্তীতে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সমুদ্রসৈকতে নারীদের হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শনিবার বিকালে ভূক্তভোগী একজন বাদী হয়ে মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে দুইজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে আযম খান নামের এক ব্যক্তি ফেইসবুকে তিনটি ভিডিও দিয়ে লেখেন, “কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শরীয়া পুলিশিং চালাচ্ছে স্থানীয় সমন্বয়কেরা। কোন নারীকে একা পেলে, কারো পোষাক পছন্দ না হলে লাঠিসোটা নিয়ে তাদের আক্রমণ করছে। কক্সবাজার এখন আফগানিস্তান।”
এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কিটকটে একা বসে থাকা ‘এক তরুণীকে’ লাঠি হাতে ঘিরে ধরেছেন চার যুবক। তারা প্রথমে ‘ওই তরুণীর’ পরিচয় এবং কেন রাতে একা সৈকতে অবস্থান করছেন জানতে চান। ‘তরুণীটি’ ঘুরতে আসার কথা জানালে তারা সন্তুষ্ট হননি।
এক পর্যায়ে যুবকরা সৈকতের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ তুলে ওই ‘তরুণীকে’ সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন।
দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যায়, আরেক ‘তরুণীকে’ ঘিরে রয়েছে কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে লাঠি হাতে আছেন কয়েকজন যুবক।
ওই যুবকদের মধ্যে একজন লাঠি দেখিয়ে ওই ‘তরুণীকে’ নির্দেশ দিচ্ছিলেন কান ধরে উঠবস করতে। পরে ভয়ার্ত ওই ‘তরুণী’ উঠবস করতে থাকলে ঘিরে থাকা লোকজনকে অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা গেছে ভিডিওতে।
আরেকটি ভিডিওতে সৈকতের ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্সে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ভুক্তভোগী এক ‘তরুণী’সহ আরও একজনকে দেখা যায়।
সেখানে সাধারণ পোশাকের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে এক ‘তরুণী’ কান্নারত অবস্থায় অভিযোগ করতে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পর সেখানে প্রবেশ করেন লাঠি হাতে ‘তরুণীকে’ উঠবস কজরানো সেই যুবক।
এসময় ওই‘ তরুণী’ যুবকে দেখিয়ে বলছিলেন, “উনি আমার ফোন কেড়ে নিয়েছেন। দয়া করে ফোনটি ফেরত দিন। প্রয়োজনে মোবাইলে থাকা সবকিছু ডিলিট করে দেব।”
এসব ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। ভিডিও দেখে ফারুকুলকে শনাক্ত করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply