বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জের ধরে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত কক্সবাজারে টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। সংঘর্ষের এ ঘটনা মিয়ানমারের ৪/৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে হলেও এ নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দারা আতংকে রয়েছেন।
তবে সকাল ১০ টার পর থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বলিবাজার ও নাগাকুরা পাড়া। ওই দুই এলাকা বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। এখন পুনরুদ্ধারে এখন দেশটির সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে তীব্র হামলা চালাচ্ছে। বিমান থেকেও সরকারি বাহিনী গোলাবর্ষণ করছে। এপার থেকে দেখা মিলেছে, জনবসতিতে আগুন লাগার কালো ধোঁয়া। গত কয়েকদিন ধরে অব্যাহত সংঘাতের জেরে প্রভাবে পড়েছে এপারের হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্তে। এতে সীমান্ত লাগোয়া চিংড়িঘের ও খেত-খামারে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম শোনা গেছে। কিন্তু মধ্যরাতের পর থেকে গোলাগুলির শব্দের পাশাপাশি একের পর এক ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। রবিবার ভোরের পর তা আরও বেড়ে যায়। সকাল ৮ টা পর্যন্ত অন্তত ৪০-৫০ টি বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এতে সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারি লোকজন আতংকে রয়েছেন।
শনিবারও দিনের বেলায় সংঘাতের ঘটনায় মিয়ানমার অভ্যন্তরে জনবসতিতে আগুন লাগার কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ জালাল বলেন, মর্টার শেলের বিকট শব্দে তাঁর এলাকায় কম্পন অনুভূত হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘনঘন কম্পনে শিশুদের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, অনেকে ভয়ে কান্নাকাটি করছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে নাফ নদীর বুকে জেগে ওঠা তোতারদিয়া দুই সপ্তাহ আগে আরাকান আর্মি দখলে নেয়। এখন মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী সেটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গুলি এসে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সর্তক রয়েছে।
তবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের মানুষ চারদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন না।
যদিও মিয়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply