বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে আবারও ভেসে এল আরও তিনটি মৃত মা কচ্ছপ। যার পেটে মিলেছে ৩১০ টি ডিম।
রবিবার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া সৈকতে একটি ও পাশের রেজুখালের মোহনায় একটি মৃত কচ্ছপ ভেসে আসে। শনিবার রাতে সোনারপাড়া সৈকতে ভেসে এসেছিল আরও একটি মা কচ্ছপ।
অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের এসব সামুদ্রিক কচ্ছপ ডিম পাড়তে সৈকতের বালিয়াড়িতে আসার পথে মারা পড়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, রবিবার আসা দুটি কচ্ছপের পেটে ২১৫টি ডিম পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে আসা কচ্ছপটির পেটে ছিল ৯৫টি ডিম। দুটি কচ্ছপের পেছনের দুটি এবং সামনের একটি ফ্লিপার বা সাঁতার কাটানো পাকনা ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। আগে পাওয়া কচ্ছপগুলোর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তত ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে কচ্ছপগুলো মারা পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপ উদ্ধারের ঘটনা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম জানিয়ে তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে বা অন্য কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কচ্ছপগুলো মারা পড়ছে।
বোরি’র দেওয়া তথ্য মতে, জানুয়ারি থেকে আজ রবিবার পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের সোনাদিয়া, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী ও টেকনাফ সৈকতে অন্তত ২৮টি মৃত কচ্ছপ পাওয়া গেছে।
এর আগে শনিবার সকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে আবার একটি মৃত মা কাছিম ভেসে এসেছে। যা পেটে ছিল ৯০ টি ডিম।এর আগে ৩ দিনে উপক‚লে দেখা মিলেছে ৩ টি মৃত ডলফিন, ১ টি মৃত পরপইস ও ১ টি কচ্ছপ। এর মধ্যে শুক্রবার (১৬ ফেব্রæয়ারি) সকালে উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে একটি এবং ইনানী সৈকতে একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রæয়ারি) হিমছড়ি সৈকতে মৃত ভেসে আসে আরও একটি ইরাবতী ডলফিন। বুধবার (১৪ ফেব্রæয়ারি) কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ভেসে আসে একটি মৃত পরপইস। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রæয়ারি) সৈকতের রেজুনদীর মোহনায় একটি অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের সামুদ্রিক মা কচ্ছপের মৃতদেহ ভেসে এসেছিল।
কয়েকদিন ধরে ভেসে আসা মৃত সামুদ্রিক প্রাণীগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলেন, বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গত বছর ৩০ মার্চ সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে একটি মরা ইরাবতী ডলফিন ভেসে এসেছিল। এর আগে গত বছর ৮ ফেব্রæয়ারি ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপ সংলগ্ন সৈকতে একই প্রজাতির মরা ডলফিন ভেসে আসে। ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট ও ২০ মার্চ একই সৈকতে মরা ডলফিন ভেসে আসে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের শুরুতেও টেকনাফ সৈকতে দুটি মরা ডলফিন ভেসে এসেছিল।
এছাড়া গত বছর ১৮ এপ্রিল রাতে কলাতলী সৈকতে একটি মরা তিমি ভেসে আসে। ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল পরপর দুইদিনে হিমছড়ি সৈকতে দুটি মরা তিমি ভেসে এসেছিল।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply