শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর মোহনায় র্যাবের সাথে ‘জলদস্যূদের’ গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত না হলেও অস্ত্র সহ আটক করা হয়েছে ৬ জনকে। উদ্ধার করা হয়েছে লুন্ঠিত মাছ ও জাল।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযান চলে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত।
কক্সবাজারস্থ র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটকরা হলেন, কুতুবদিয়ার লেমশিখালি এলাকার মাহমুদ উল্লাহর ছেলে মো. বাদশা (২৭), চট্টগ্রামের নারিকেল তলা এলাকার আবু বক্করের ছেলে মো. আল-আমিন (২৫), কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরুং এলাকার মো. ইসমাইলের ছেলে রায়হান উদ্দিন (২২), একই এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে এরশাদুল ইসলাম (২০), লেমশিখালীর রহিম উল্লাহর ছেলে মো. মারুফুল ইসলাম (২২), দক্ষিণ ধুরুং এলাকার মো. ইউনুছের ছেলে মো. রাফি (১৯)।
অভিযানে লুন্ঠিত মাছ ও জাল ছাড়াও ৩ টি দেশীয় তৈরী এলজি, ১৪টি কার্তুজ, ৩টি ধারলো দা, ২টি স্মার্ট ফোন এবং ৮টি বাটন ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, ২২ জানুয়ারি মহেশখালী উপজেলার কুতুজুমের বাসিন্দা মো. বেলাল হোসেন র্যাব-১৫ এর সদর দপ্তরে একটি অভিযোগ অভিযোগ করেন। যেখানে বলা হয় ২১ জানুয়ারি বিকালে ১০/১২ জন অবৈধ অস্ত্রধারী ডাকাত বঙ্গোপসাগরে বাঁকখালী নদীর মোহনার অদূরে মৎস্য আহরণরত অবস্থায় তার মালিকানাধীন ইঞ্জিন চালিত মাছ ধরার ট্রলারে হামলা চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার ট্রলারে থাকা আহরিত মাছ, মাছ ধরার জাল, বোটের ইঞ্জিনের মালামাল, তৈল ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যায়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা শাখার সার্বিক সহযোগিতায় ২৩ জানুয়ারি থেকে সাগরে অভিযান চালায়। অভিযানের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গোপসাগরের বাঁকখালী নদীর মোহনায় একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারকে আভিযানিক দলের সন্দেহ হলে র্যাবের আভিযানিক দল ট্রলারটির গতিরোধের চেষ্টা করে। এ সময় ট্রলার থেকে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। র্যাবও পাল্টা গুলি করলে ৫/৬ জন জলদস্যূ সমুদ্রে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণে এনে তল্লাশী করলে লুন্ঠিত মাছ, জাল ছাড়াও অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করে গ্রেফতার করা হয় ৬ জনকে।
তিনি জানান, আটকরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে জলদস্যূদের গডফাদার পেকুয়ার রাজাখালীর নুরুল আবছার বদু, জালাল আহমদ এবং কুতুবদিয়ার ইসহাক মেম্বার গত এক সপ্তাহ আগে নিজেদের ফিশিং ট্রলারে করে জলদস্যূদের সাগরে পাঠায়। তারা প্রথমে নিজেদের ট্রলার নিয়ে রাজাখালীর কালু কোম্পানির বোট ডাকাতি করে মাঝিমাল্লাদের বেধড়ক পিটিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নামিয়ে দেয়। পরে কালু কোম্পানির বোট দিয়ে ডাকাতি শুরু করে যাতে গডফাদারদের চিহ্নিত করতে না পারে। ডাকাতির পর মাছ ও মালামাল বিক্রি করে যে টাকা পায় তার ৪০% গডফাদারদের, ২০% তেল খরচ এবং যারা সশস্ত্র ডাকাতি করেছে তারা ৪০% ভাগ নিয়ে থাকে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, অভিযানে পালিয়ে যাওয়া নুরুল আবছার বদু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যূ। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি সহ ৩০টি মামলা রয়েছে। জালাল আহমদ এর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা সহ ১০টি মামলা রয়েছে এবং মো. ইসহাক মেম্বারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যূ। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা সহ ১০টি মামলা রয়েছে। আটক বাদশা একজন জলদস্যূ সর্দার।
এব্যাপারে মামলা করে আটকদের কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply