শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : এই বাংলাদেশের মানুষকে নিয়েই নিজের পরিবার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আপনাদের মাঝে আমি আমার বাবা, মা, ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি। আপনাদের জন্য আমি আমার বাবার মতো জীবন দিতেও রাজী।
দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া খ্যাত মহেশখালীর মাতারবাড়ি আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ি জনসভা মঞ্চে গিয়ে পৌঁছেন ৩ টা ৪০ মিনিটে। এর পর উদ্বোধন করছেন ১৩ প্রকল্প। যে উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। একই সাথে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ প্রকল্পের কাজ।
সভা মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য প্রদান শুরু করেন ৪ টা ৫ মিনিট।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর যারা ক্ষমতা এসেছেন তারা কেউ এলাকার উন্নয়ন করেনি। পাশে দাঁড়াইনি উপকূলের মানুষের পাশে। বিরোধী দলের থাকাকালিন এসব এলাকায় এসে দেখেছি এখানে লবণ চাষ ছাড়া কিছুই হত না। সেই লবণ চাষীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা দেখতে মাতারবাড়িতে এসেছি। শুনেছি এসব এলাকার মানুষের সার্বিক দাবি। তাই ক্ষমতায় আসার পর এসব এলাকার উন্নয়নে কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, আজ রেল লাইন উদ্বোধন করলাম। এখন রেল যোগে চট্টগ্রাম, ঢাকায় যাওয়া সহজ হবে।
এখানে উদ্বোধন করা প্রকল্প ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে ওই এলাকার স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিককে পাশে ডেকে জনতার হাতে তুলে দেন বলে মন্তব্য করে বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা মূল্যে লেখা পড়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বয়স্ক, বিধবা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একটা মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। কেউ থাকলে জানাবেন গৃহ ও ভূমি দেয়া হবে। প্রতিটি মানুষকে নিজের জমিতে খাদ্য ও সবজী উৎপাদন করুণ।
ইন্টারনেট প্রযুক্তির সহলভ্যতার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুন এটা আমরা চাই। আমরা দেশের মানুষের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছি। এদেশের মানুষ না খেয়ে থাকবেন না। মানুষ যাতে কোন ভাবেই কষ্ঠ না পায় যেটা আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কক্সবাজার আন্তর্জাতিব বিমান বন্দর হবে একটি দৃষ্টি নন্দন বিমান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লবণ চাষীরা যাতে লবণ চাষ করতে পারে তার জন্য জমি, বাসগৃহ হারানো মানুষকে ঘর দেয়া সহ সকল কিছুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
লবণ চাষ অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লবণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লবণ চাষ অব্যাহত রাখতে হবে। কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম হয়েছে। ফুটবল স্টেডিয়াম হবে। ক্রিড়া কমপ্লেক্স হবে। প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম হচ্ছে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা এসে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন হয়েছে। কক্সবাজারের মানুষ সমুদ্রের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। তাদের কথা বিবেচনা করে সব করা হচ্ছে। তাই আজ মহেশখালী দ্বীপ আলোকিত একটি দ্বীপ।
তাই আগামি নির্বাচনের নৌকার মার্কায় ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনতার কাছে হাত তুলে অঙ্গিকার যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করে গেছেন। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমি অঙ্গিকারবদ্ধ। আমি পিতা, মা, ভাই, সকলকে হারিয়েছি। তাদের সকলকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এদেশের মানুষের মঙ্গল ছাড়া আর কিছুই চাই না। জিয়াউর রহমান আমাকে দেশে ফিরতে বাঁধা দিয়েছেন। সকল বাঁধা উপেক্ষা করে এদেশে এসেছি এদেশের মানুষকে ভালোবেসে। বাংলাদেশের মানুষ উন্নত জাতি হবে এটা আমার একান্ত চাওয়ার ছিল। তার জন্যই কাজ করছি। তাই নৌকায় ভোট প্রদান করতে হবে। যারা এদেশের মানুষকে ভালোবাসে না তাই বাসে আগুন দিচ্ছে। মানুষকে পুঁড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এরা সব ধ্বংস করতে জানে। সৃষ্টি করতে জানে না। তাদের কাছ থেকে সর্তক থাকতে হবে। এই বাংলাদেশের মানুষ আর পরিবার। আপনাদের মাঝে আমার বাবা, মা, ভাইয়ের স্নেহ পেয়েছি। আপনাদের জন্য আমি আমার বাবার মতো জীবন দিতেও রাজী।
প্রধানমন্ত্রী ৪ টা ৩২ মিনিটে তার বক্তব্য শেষ করেন। ওই সময়ও আবারও আশেককে জনতার হাতে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী যে ১৩ টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তাতে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে নির্মিত মাতারবাড়ি ১২ শত মেগা ওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযুক্ত। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার পিসি বক্স গর্ডার ব্রিজ নিমার্ণ, কক্সবাজার সদরের খাল লাইনিং এপ্রোচ রোড ও ব্রিজ। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৪ টি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪ টি, প্রবাসি কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১ প্রকল্প।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ১৮ হাজার হাজার কোটি টাকার টেকনাফ মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার, রামুর নন্দাখালী ১৮৪ মিটার আর্চ আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নিমার্ণ, প্রাথমিক বিদ্যালয় সমুহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply