বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতিমা বিসর্জন : বৃষ্টিস্নাত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে সৈকত জুড়ে জনারণ্যে

বিশেষ প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘হামুন’ প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে কক্সবাজারে থেমে থেমে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। একই সঙ্গে স্বাভাবিক পরিস্থিতির চেয়ে উত্তাল হয়ে উঠে সাগর। আর সেই বৃষ্টিস্নাত দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াও উপেক্ষিত হয়েছে কক্সবাজার সৈকতের প্রতিমা বিসর্জনকে ঘীরে। যা উপেক্ষা করে সৈকত হয়ে উঠেছিল জনারণ্য। যেখানে মানুষ আর মানুষে মিলে গেছে পূজারি, পর্যটক, স্থানীয় সহ সকল ধর্মের মানুষের একাকার হয়ে।

প্রতিমা বিসর্জনের মুল অনুষ্ঠানটি সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চ ঘীরে হলেও মানুষের চাপ ছিল সৈকতের সী গাল, সুগন্ধা পয়েন্ট পর্যন্ত। ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা প্রশাসনের কর্মীরা বলছেন, এই প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে সৈকতে কমপক্ষে ৪ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩ টা থেকে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষ্যে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শুরু হয় বিজয়া দশমীর সম্প্রীতির সভা। মঙ্গলবার সকাল থেকে হওয়া মাঝারি মানের বৃষ্টি তখনও অব্যাহত ছিল। এর আগে থেকে ট্রাক যোগে এ পয়েন্টে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে আনা শুরু হয় প্রতিমা।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানিয়েছেন, তাদের তালিকা মতে লাবণী পয়েন্টে একে একে ২০২ টি প্রতিমা আনা হয়েছিল। যেখানে কক্সবাজার জেলা ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি সহ চট্টগ্রাম, বান্দরবন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে এসেছিল পূজারি।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টের সম্প্রীতি সভাটি ছিল উলু ধ্বনি, মা দূর্গাকে জয় ধ্বনি আর ঢোল বাজনা মুখরিত। যে আবহতে সন্ধ্যার আগেই উত্তাল সাগরের ঢেউতে ভাসিয়ে দেয়া হয় একে একে প্রতিমাগুলি। ওই সময় অনেক পূজারিকে কাঁন্না করতেও দেখা মিলে।

সম্প্রীতি সভায় প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের এই বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা আছেন, মুসলমান সমাজের প্রতিনিধিরা আছেন, সরকারের প্রতিনিধিরা আছেন। আমি এখানে যোগ দিয়েছি একজন বৌদ্ধ নাগরিক হিসেবে। এটাই বাংলাদেশ। এটাই শেখ হাসিনার অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। এর বিপরীতে বাংলাদেশকে যারা বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করবে, এই হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান এক জাতি এক প্রাণ হিসেবে আমরা সকলেই সেই অপশক্তিকে, সেই অসুর শক্তিকে আমরা বধ করব। এটাই হোক আজকের অনুষ্ঠানের শপথ।

তিনি বলেন, আজকে দেখলাম ঢাকের আওয়াজে দুর্গতিনাশনি দেবীকে বিদায় দেয়ার আয়োজন করেছি, আমরা সেই সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাচ্ছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে বলা হচ্ছে, সাইক্লোন হামুন আঘাত হানতে পারে। আমরা দুর্গতিনাশনি দেবীর কাছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে এই মানব সমাজকে বাংলাদেশের নাগরিকে যাতে রক্ষা করে তার জন্য পরম করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, উৎসব কখন হয় যখন আমরা সবাই মিলে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য, অগ্রগতির জন্য জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় অধিকার ধর্ম চর্চার অধিকারকে তিনি আজকে সুরক্ষা দিয়ে গেছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে পবিত্র ঈদুল ফিতর যেভাবে উদযাপিত হয় একই ভাবে শ্রীকৃষ্ণের জন্মষ্টামী উৎসব হয়। একই মর্যাদায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সেখানে অনুষ্ঠান হয়। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য সেখানে বড়দিনের আয়োজন হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তিনি ধার্মিক, কোন ওয়াক্তে নামাজ কাজা করেন না।তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে তিনি একই দৃষ্টিতে দেখেন।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল করের সভাপতিত্বে সভায় কক্সবাজার-রামু-ঈদগাঁও আসনের সংসদ সদস্য সাইমুন সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে সৈকত জুড়ে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এটি শেষ হয়েছে।

এছাড়া একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজুনদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888