মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ন

সেন্টমার্টিন থেকে সরানো হল ৭২০০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য

টেকনাফ প্রতিবেদক : পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে সাত হাজার কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সরিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ’।

গত বছরের মতো এবারও ৯ অক্টোবর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা তিন দিন সেন্টমার্টিন দ্বীপের অলিগলি ও সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক বোতল, খাদ্য দ্রব্যের প্যাকেট, নানান ধরনের অপচনশীল ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহে নেতৃত্ব দেয় ‘কেওক্রাডং বাংলাদেশ’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

এছাড়া কেওক্রাডং বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর নভেম্বর/ডিসেম্বর মাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপে আন্তর্জাতিক সংস্থা ওশান কনজারভেন্সি ও কোকাকোলার সহযোগিতায় বড় ধরণের আরো একটি পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

সেন্টমার্টিনে স্থানীয় বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার পযর্টক প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বেড়াতে এসে ফেলে যান নানা রকম প্লাস্টিক বর্জ্য। সঙ্গে যোগ হয় স্থানীয়দের ব্যবহারিত বিভিন্ন পলেথিন বর্জ্য। অপচনশীল এসব প্লাস্টিক বর্জ্যের ভারে হুমকিতে পড়েছে ছোট্ট এই দ্বীপের প্রাণ-প্রকৃতি। ভ্রমণ মৌসুম শুরুর ঠিক আগে প্রতি বছর সেন্টমার্টিনের সমুদ্র সৈকত আর লোকালয়ের যত্রতত্র পড়ে থাকা এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সরানোর মতো মহৎ কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশের সদস্যরা।

কেওক্রাডং বাংলাদেশের সমন্বয়কারী এবং ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশের সমন্বয়কারী মুনতাসির মামুন জানান, এসব প্লাস্টিক বর্জ্য ১৫০টি প্লাস্টিকের বস্তায় ভর্তি করে ২টি ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফে নিয়ে আসা হয়। পরে প্লাস্টিক এই বর্জ্যগুলো ট্রাকযোগে টেকনাফ পৌরসভার বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।

মুনতাসির মামুন বলেন, সামুদ্রিক আর্বজনা বা মেরিন ডেবরিজ বর্তমান দুনিয়াতে বহুল আলোচিত। এর মূল কারণ হিসেবে মেরিন ডেবরি থেকে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক/মাইক্রোফাইবার বা যে কোনো ধরনের প্লাস্টিকের কণা সামুদ্রিক পরিবেশ তথা যেকোনো পরিবেশের সঙ্গে যে হারে মিশে যাচ্ছে তাতে আমাদের খাদ্য শৃঙ্খলে প্লাস্টিকের উপস্থিতি, মানবদেহে, রক্তে, মলে এমনকি মাতৃদুধেও প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাচ্ছে। এর ভয়াবহতার পরিমাপ আমাদের এখনও পুংখানুপঙ্খভাবে করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ভৌগলিক কারণে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের অন্তিম গন্তব্য যেকোনো জলাধার হয়ে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। আর সেন্টমার্টিনের মতো ছোট দ্বীপে পড়ে থাকা প্লাস্টিক যদি মূল ভূখন্ডে নিয়ে আসা না হয় তবে এর পরিণাম শুধু এই দ্বীপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গোপসাগরে। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস ছিল আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেই পরিণামকে যতটা সম্ভব সীমিত করা।

সেন্টমার্টিনের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল বলেন, সেন্টমাটিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এ উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব হবে। আগামীতে সেন্ট মার্টিনে এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করলে দ্বীপের পরিবেশের জন্য তা খুবই উপকার বয়ে আনবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888