শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জাফরুল ইসলাম বাবুলকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তার করার ঘটনা সাজানো ও ষড়যন্ত্রমুলক বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার। তাই এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিও করেছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সাংবাদ সম্মেলনও করেছে বাবুলের পরিবার পক্ষ।
গত ৫ অক্টোবর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের একটি দল জাফরুল ইসলাম বাবুলকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে গনমাধ্যমকে বিষয়টি অবহিত করেন। ওই সময় র্যাব প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে চোরাকারবারির অন্যতম মূলহোতা জাফরুল ইসলাম বাবুল মেম্বার। ৫৫ হাজার ইয়াবা, ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাবুলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি চক্র রয়েচে। যারা মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র, জোরপূর্বকভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন, অবৈধভাবে চোরাই পথে গবাদি পশু চোরাচালান, অবৈধভাবে পাহাড় কেটে মাটির ব্যবসাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বাবুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ২১টি মামলা রয়েছে। বাবুল ২০০৫ সাল থেকে মাদক চোরাচালানে জড়িত। তার নেতৃত্বে প্রতিমাসে ৫০ লাখের উপরে ইয়াবা আনা হয় এবং শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
র্যাবের দেওয়া এ তথ্য মিথ্যা ও সাজানো বলে দাবি করে বাবুলের পরিবার বলছে, তাঁর বিরুদ্ধে জায়গা-জমি ও রাজনৈতিক ৩-৪টি মামলা রয়েছে। এতে মাদকের কোনো মামলা নেই।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বাবুলের ভাই একরামুল কবির ও বোন শাহীনা আক্তার বলেন, বাবুল একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। তাঁর স্ত্রীও এমবিবিএস পাস চিকিৎসক। এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় হেরে গিয়ে সোলতান আহমদ ও তার সহযোগীরা বাবুলে ফাঁসাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অথচ সোলতানই তালিকাভূক্ত মাদক কারবারী। সোলতানের বিরুদ্ধে মাদকসহ ১৯টি মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী সুলতান আহমদ এবং স্থানীয় চিহ্নিত মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে র্যাবকে ভুল তথ্য দিয়ে এ গ্রেপ্তার নাটক সাজানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে গত ৪ অক্টোবর উখিয়ার জামতলী এলাকা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। পরদিন র্যার বাবুলকে টেকনাফের কাটাখালী থেকে ইয়াবা, অস্ত্র গুলিসহ গ্রেপ্তার দেখায়।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বাবুলের মেয়ে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অনিমা ইসলাম অর্পা, চাচা হাফেজ জাকের হোসেন, বোন মনোয়ারা বেগম ও ফাতেমা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যরা।
বিষয়টি নিয়ে সোলতান আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, র্যাব একটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এই বাহিনীর সাথে আমার যোগাযোগ নেই। আর আমার কথায় র্যাব একজন মানুষকে ধরে নিয়ে যাবে এটা সত্য হতে পারেনা।
তিনি বলেন, বাবুল একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী। নানাভাবে আমাকে ও আমার পরিবারের উপর হামলা, মারধরের ঘটনার মামলার আসামিও। তাই আমাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. জোবায়ের ছৈয়দ বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে হত্যা,দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৮টি মামলা রয়েছে। তবে আগের মাদকের মামলা নেই বলে জানান ওসি।
বিষয়টি সম্পর্কে র্যাবের সাথে যোগাযোগ করা হলে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পক্ষে জানানো হয়, র্যাব কারও কথা অভিযান পরিচালনা করে না। নিজস্ব তথ্য নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। বাবুলকে গ্রেপ্তারের পর পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তাদের বক্তব্য।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply