বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

বিশেষ ছাড়ের ঘোষণায় ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’

নুপা আলম : ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে ৩ বন্ধু সহ কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন রাজ হোসেন। ২৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার পৌঁছার পর তারা কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল গ্যালাক্সির ৬১১ নম্বর কক্ষে উঠেছেন। বিভিন্ন স্থানে নানাভাবে ঘুরা-ঘুরির পর অনেকটা বাধ্য হয়ে নন-এসি রুমটির ভাড়া প্রতিরাত আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে।

রাজ হোসেন বলেন, ‘এখানে যে ছাড়ের কথা বলা হচ্ছে তা মুখে, কার্যকর নেই। নন এসি যে রুমটি আড়াই হাজার টাকা ভাড়া নেয়া হচ্ছে এটা অনেক বেশি। হোটেল গ্যালাক্সিতে গিয়ে তা দেখে যাচাই করে দেখতে পারেন।’

একই ভাবে ৩ দিনের ছুটিতে ঢাকার শ্যামপুর থেকে ৬ বন্ধু মিলে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন জামিল আহমেদ জয়। কলাতলীর সুগন্ধা এলাকার হোটেল সিলভার ৫০৫ ও ৫০৬ নম্বর নন এসি কক্ষ ২ টি প্রতিরাত ২ হাজার টাকা করে ভাড়া নিয়েছেন তারা।

কিন্তু স্বাভাবিক নিয়ে নন এসি একটি কক্ষ ভাড়া ৮ শত টাকা বেশি হওয়ার কথা নয় বলে মন্তব্য কক্সবাজার পিপলস্ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল।

তিনি জানান, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপি পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালের আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। এ উপলক্ষে পূর্ব ঘোষণা মতে আবাসিক হোটেল, রেস্তোঁরা, পরিবহনখাতসহ সৈকতপাড়ের বিচবাইক, কিটকট ও জেডস্কিতে ৬০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড় দেয়ার কথা। কিন্তু ওটা কেবল ঘোষণায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। ঘোষণা কেবল ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসেবে মনে করছেন পর্যটকরা।

যদিও টানা ছুটিকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে পর্যটক আগমনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।

তিনি জানিয়েছেন, কক্সবাজারের ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল মোটেলের ৯৯ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে। এ হিসেব মতে প্রতিদিন গড়ে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।

ছাড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব আবাসিক হোটেল-গেস্ট হাউজ আমাদের সংগঠনভুক্ত নয়। আমাদের সংগঠনভুক্তরা এ ছাড়টি যথাযথভাবে কার্যকর করছেন। বাকিদের কথা আমরা জানি না।’

আবাসিক হোটেল কর্তৃপক্ষও ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। হোটেল বিচওয়ের ম্যানেজার মিজান বলেন, আগে যারা বুকিং দিয়েছিল তাদের কিছু ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়েছিল। এখন কোনো ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে না।

সিলভার বে মেরিনার ফ্রন্ট ডেস্ক কর্মকর্তা মোস্তফা বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর একদিন আমরা ডিসকাউন্ট দিয়েছি। এখন আর নেই। আমরা আমাদের নিয়মে রুম দিচ্ছি।

রেস্তোঁরায়ও ছাড়ের ঘোষণাটা ঘোষাণাই সীমাবদ্ধ রয়েছে। যা কার্যকর হচ্ছে না।

সোয়েব কবির নামের এক পর্যটক বলেন, কলাতলী জোনের বাবুর্চি রেস্তোঁরায় খাবার খেয়েছি। কিন্তু কোন ধরনের ছাড় দেয়নি।

সুমাইয়া আকতার নামের এক নারী পর্যটক বলেন, গত দুদিন ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছি। হোটেল কিংবা রেস্তোঁরায় কোন ধরণের ছাড় দিতে দেখেনি।

এর মধ্যে হোটেল ও রেস্তোঁরায় ছাড়ের ঘোষণা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ এর নেতৃত্বে একটি টিম মাঠে নামে। এসময় সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শুভাশীষ চাকমা, সদর ও ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জাকারিয়া, জেলা পুলিশ ও ৩৯ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা অভিযানে সঙ্গে ছিলেন।

অভিযানের টিমটি শহরের ঝাউতলাস্থ পউষী, ঝাউবন, রান্নাঘর এবং কলাতলী হোটেল মোটেল জোনে নিরিবিলি অর্কিড, জুঁই রেস্তোঁরা, কক্স-ভেকেশন অ্যাপার্টমেন্টসহ কয়েকটি রেস্তোঁরায় যায়। এসময় প্রশাসনের টিমটি পর্যটকদের কথা শুনেন এবং হোটেল ও রেস্তোঁরা কর্তৃপক্ষকে সর্তক করে দেন।

এই সময় প্রশাসনের টিমকে রেস্তোঁরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমাদের সমিতির আওতাভুক্ত ১১০টি রেস্তোঁরা রয়েছে। তারা সবাই ১৫ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। তবে সমিতির আওতার বাইরে যারা রয়েছে তারা কিন্তু ছাড় দিচ্ছে না। তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, সপ্তাহব্যাপি পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালে প্রত্যেকটি হোটেল ও রেস্তোঁরা বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে। এখন মূলত দেখতে এসেছি, ছাড়ের ঘোষণাটি বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা বা আগত পর্যটকরা প্রতারিত হচ্ছে কিনা। কোন পর্যটক যদি প্রতারিত হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এসব হোটেল ও রেস্তোঁরার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888