শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক টেকনাফের পাহাড়ে জেল ফেরত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার টেকনাফে ৭ লাখ টাকা মালামাল নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারি স্থল বন্দরের বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানি কারক সিআইপি ওমর ফারুক টেকনাফের নিকটবর্তী মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত : গুলি আসছে স্থলবন্দর ও আশে-পাশের এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রামুতে বড় ভাই হত্যা মামলায় ছোট্ট ভাই গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ এক রোহিঙ্গা আটক সৈকতে নারী হেনস্তাকারি ফারুকুলের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

কটেজ জোনে অঘোষিত ৬ “টর্চার সেল’’

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনে ভয়ঙ্কর অপরাধ জোন হয়ে উঠেছে কটেজ জোন এলাকা। সংঘবদ্ধ ৬টি সিন্ডিকেট নানা কৌশলে এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে। মাদক সরবরাহ, যৌনবৃত্তি, জিম্মি করে টাকা আদায়, অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীদের জিম্মি করে যৌন পেশায় ব্যবহার, এমনকি হত্যার মতো অপরাধে জড়িত এই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সিন্ডিকেটটি।

গত সোমবার (০৮ আগস্ট) ভোরে ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযানে কটেজ জোনে সন্ধান মিলে ‘টর্চার সেলের’। যেখান থেকে জিম্মি অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৪ জনকে। এরপর সরকারি দায়িত্বশীল একটি সংস্থা অনুসন্ধানে উঠে আসে কটেজ জোনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ৬টি সিন্ডিকেটের নাম। যে সিন্ডিকেটের সঙ্গে নারী সদস্যসহ অন্তত ২০০ অপরাধী জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।

টর্চার সেল সন্ধান পাওয়ার দিন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, কটেজ জোনে আরও কয়েকটি টর্চার সেল রয়েছে। যদিও আইনগত ব্যবস্থার স্বার্থে তিনি ওইসব কটেজের নাম প্রকাশ করেননি। ঘটনার পর থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ একযোগে কটেজ জোনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা চালাচ্ছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যবসায়ী, কটেজ মালিক এবং কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, কটেজ জোন এলাকায় কটেজের ভাড়াটিয়া মালিক হয়ে অঘোষিত টর্চার সেল পরিচালনা করে আসছে এই ৬টি সিন্ডিকেট। যার মধ্যে সাইনবোর্ড বিহীন শিউলি কটেজে ভাড়াটিয়া মালিক হিসেবে রয়েছেন রহিম ও লোকমান নামের দুই ব্যক্তি। ট্যুরিস্ট পুলিশ এরই মধ্যে শিউলি কটেজে টর্চার সেল সন্ধান মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শিউলি কটেজ ছাড়াও অঘোষিত টর্চার সেল পরিচালিত হচ্ছে বেলাভূমি কটেজ। যা পরিচালনা করেন মকছুদ মিয়া আসিফ নামের এক ব্যক্তি, ক্লাসিক কটেজ পরিচালনা করেন মোহাম্মদ ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, ঢাকাবাড়ি কটেজ পরিচালনা করেন আব্বাস নামের এক ব্যক্তি, সি-টাউন কটেজ পরিচালনা করেন সিরাজ নামের এক ব্যক্তি, গ্রীন কটেজ পরিচালনা করেন আমির।

মূলত এই ৬টি কটেজকে কেন্দ্র করে কটেজ জোনে গড়ে উঠেছে অপরাধের ৬টি সিন্ডিকেট। যাদের মাঠ পর্যায়ে রয়েছে একাধিক দালাল সদস্য। যারা রিক্সা, ইজিবাইক চালক সেজে পর্যটন স্পট ও কলাতলীর হোটেল মোটেল জোনে ঘুরাফেরা করেন। আগত পর্যটকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে কম দামে রুম দেয়ার প্রলোভন, অভিভাবকহীন অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী টার্গেট করে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসে এসব কটেজে। এরপর কটেজে থাকা নারী সদস্যরা অশ্লীলভাবে পর্যটককে জিম্মি করে ভিডিও ধারণ করে। এরপরই টাকা আদায়ের জন্য জিম্মি করে রাখা হয়। আত্ম-মর্যাদার ভয়ে অনেকেই টাকা দিয়ে চলে গেলেও বিষয়টি থেকে যায় গোপনে। একই সঙ্গে অপ্রাপ্ত নারীদের জিম্মি করে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে বাধ্য করেন যৌন পেশায়। বিভিন্ন সময় এসব কটেজ থেকে অনেকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। একই সঙ্গে এই ৬টি কটেজকে মাদকের মজুদের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মাঠ পর্যায় থেকে দালাল চক্রের সদস্যরা চাহিদা মতে হোটেল মোটেল জোনে খুচরাভাবে বিক্রি বা সরবরাহ করে থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, এসব আস্তানা থেকে পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মীর নামে আদায় করা হয় সপ্তাহিক মাসোহারাও। হোটেল মোটেল জোনের ডন হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তি এই টাকা নেন বলে প্রচার রয়েছে। যদিও ৮ আগস্ট ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, পর্যটন জোনে কোনভাবেই অপরাধ সংঘটিত হতে দেয়া হবে না। অপরাধীদের আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নেয়া হবে ব্যবস্থা। শিউলী কটেজের মামলার গ্রেপ্তার ২ জন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। অপরাধের ধারণ, দালাল চক্রের সদস্যদের নামও বলেছে। এটা যাচাই বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888