বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পুরুষ সিংহ সম্রাটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় শেষ পর্যন্ত মারা গেছে স্ত্রী সিংহ নদী।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সকালে পার্কের বেস্টনীতে সিংহ নদী মারা যায়।
এ ঘটনায় সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি রুজু করেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন বলেন, সম্ভবত ভোর ৫ টার দিকে সিংহ নদীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা বিষয়টি জানতে পারি সকাল সাড়ে ৬টার দিকে। তখন সিংহ নদী তার কক্ষে পড়েছিল। পরবর্তীতে গিয়ে দেখা যায় তার কোন নড়াচড়া বা নিশ^াস নেই।
হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন বলেন, নদীর ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পার্কের একটি স্থানে গর্ত করে ফুঁতে ফেলা হয়েছে। আর সম্রাট একাকী দিক-বেদিক বেষ্টনীতে ঘুরছে। আর নদীর খাঁচার সামনে এসে ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে সম্রাট সুস্থ রয়েছে এবং সে নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করছে।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পুরুষ সিংহ সম্রাট আঘাত করে নদীকে। এরপর নদীর শরীর দুর্বল, ওজনও কমে যায়। চোখ দিয়ে পানি পড়া আর মুখের নিচে গলায় সম্রাটের কামড়ের ক্ষত চিহ্ন বেড়ে যায়। অসুস্থ সিংহ (নদীর) উন্নত চিকিৎসার জন্য একাধিকবার মেডিকেল বোর্ড বসানো হয়। সিরাম ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে সিংহীর শরীরে ‘ভাইরাল ইনফেকশন’ পাওয়া গেছে, যার লক্ষণ ভালো নয়। চিকিৎসার জন্য গত ১ এপ্রিল মেডিকেল বোর্ড সিংহীকে অবশ করেছিল। ফলে তার চেতনা ফিরে আসতে সময় লেগেছিল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। এরপর নমুনা সংগ্রহ করার জন্য পুনরায় অবশ করা যাচ্ছে না। কারণ, তার শরীর দুর্বল। আর ২৭ মার্চ থেকে নদী খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, সম্রাটের আঘাতের পর থেকে নদীর অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তারপরও নদীকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সকালে নদী বেষ্টনীর খাঁচাতে মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজারায় ২ হাজার ২৫০ একর আয়তন বনে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। এর আগে ১৯৮০ সালে এটি ছিল হরিণ প্রজননকেন্দ্র। বর্তমানে পার্কে জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, জলহস্তী, ময়ূর, অজগর, কুমির, হাতি, বাঘ, ভালুক, সিংহ, হরিণ, লামচিতা, শকুন, কচ্ছপ, রাজধনেশ, কাকধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙিলা বক, সারস, কাস্তেচরা, মথুরা, নিশিবক, কানিবক, বনগরুসহ ৫২ প্রজাতির ৩৪১টি প্রাণী আছে। এগুলো আবদ্ধ অবস্থায় আছে। উন্মুক্তভাবে আছে ১২৩ প্রজাতির ১ হাজার ৬৫টি প্রাণী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুইসাপ, সজারু, বাগডাশ, মার্বেল ক্যাট, গোল্ডেন ক্যাট, ফিশিং ক্যাট, খ্যাঁকশিয়াল ও বনরুই ইত্যাদি।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply