সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে আলোচিত মোরশেদ বলী হত্যাকান্ডের ঘটনায় আ.লীগ-যুবলীগের ১০নেতাসহ ২৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে নিহত মোরশেদের ভাই জাহেদ আলী। হতভাগা মুরশেদ আলী পিএমখালীর মাইজপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মরহুম ওমর আলীর পুত্র।
শনিবার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৫ টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এমামলা রুজু করা হয়। মামলায় এজাহার নামীয় ২৬জন এবং অজ্ঞাত আরও ৮/১০জনকে আসামী করা হয়েছে।
অভিযুক্ত আসামীরা হলেন- পিএমখালীর মাইজপাড়ার কবির আহমদের পুত্র সদর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মালেক (৪৫) ও তার ভাই যুবলীগনেতা কলিম উল্লাহ (৩২), মনির আহমদের ছেলে মো. আলি প্রকাশ মোহাম্মদ (৪৫), সাবেক মেম্বার মূলহোতা মাহামুদুল হক (৫২), হাবিব উল্লাহর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), কাঠালিয়া মোরা ঘোনার পাড়া এলাকার শফিউল আলমের পুত্র মতিউল ইসলাম (৩৪) প্রকাশ ভুয়া সাংবাদিক, শফিউল আলমের ছেলে ৫ মামলার আসামী তাহেরুল ইসলাম (৪৬), ফজল আহমেদের ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং ৯ নং ওয়ার্ডের এমইউপি আরিফ উল্লাহ (৩৫), মৃত মনির আহমদের পুত্র ছৈয়দুল হক (৪০), হামিদুল হক (৪০), তোতকখালী সিকদার পাড়া এলাকার মোক্তার আহমদের পুত্র এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তাফা আলাল, বদিউজ্জামান সিকদারের পুত্র মো. যুবলীগ নেতা আক্কাস (৪০), মো. আলীর ছেলে মো. শাহীন(২৫), বাংলাবাজার এলাকার ছৈয়দ আহমদের পুত্র সদর আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল আবেদিন হাজারী (৪৮), গোলার পাড়ার মো. ইলিয়াসের পুত্র এবং আলীর ভাই বহু অপকর্মের হোতা মাহামুদুল করিম (৪০), তার ভাই দিদারুল আলম (৩০), বশির আহমদের ছেলে আলীর ভাতিজা ওমর ফারুক (৩০), মাইজপাড়ার মৃত ফোরকান আহমদের ছেলে খোরশেদ আলম (৩০), মাহামুদুল হকের ছেলে আব্দুল্লাহ (৩০), মাহমুদুল হকের পুত্র আব্দুল আজিজ (২৮), আব্দুল হাই (২৩), মোহাম্মদের ছেলে মো. ইয়াছিন (১৮), শফিউল আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৫), মনির আহমদের ছেলে ওসমান (৩৫), নুরুল হকের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (১৯), কাঠালিয়া মোড়া শফিউল আলমের ছেলে আজহারুল ইসলাম (৩২) সহ অজ্ঞাত আরও ৮/১০জন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) মায়ের জন্য ইফতার কিনতে গিয়ে চেরাংঘর বাজারে জনসম্মুখে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন পিএমখালী এলাকার প্রতিবাদী যুবক মোরশেদ। এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক ঝটিকা অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৩জনকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিল্ডিং ভাঙার কাজে ব্যবহৃত বিশালাকার হাতুড়ির প্রথম আঘাতেই মাটিতে পড়ে যান মোরশেদ। ঘটনার আকস্মিকতা উপলব্ধি করতে পেরে তিনি হামলাকারীদের বলছিলেন, ‘আমি রোজায় বেশি ক্লান্ত, ইফতারের সুযোগ দাও, মারতে চাইলে ইফতারের পর মারিও।’
কিন্তু রোজাদার বলার আকুতিও তাদের দমাতে পারেনি। শেষরক্ষা হয়নি প্রয়াত শিক্ষক ওমর আলীর ছেলে মোরশেদ আলী ওরফে বলী মোরশেদের (৩৮)।
হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাবাজার এলাকার আলী আহমদ কোম্পানি জানান, বাজার করতে চেরাংঘর বাজারে পৌঁছানোর একটু পর শোরগোল শুনতে পাই। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গেলে পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন হাজারিকে বলতে শুনি, ‘উপরের নির্দেশে তারে (মোরশেদ) মেরে ফেলা হচ্ছে, কেউ সামনে আসবে না। যারা আসবে তাদেরও অবস্থা খারাপ হবে।‘
এ সময় আবদুল মালেকসহ ১৫-২০ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী মোরশেদকে প্রহার ও কোপাচ্ছিলেন। সবাইকে তদারকি করছিলেন পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলাল।
এলোপাতাড়ি মারধর ও কোপানোর ফলে মোরশেদ একটু নিস্তেজ হয়ে গেলে কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারীরা। একই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply