শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সদরের লিংকরোডে দূর্বৃত্তরা গুলি করে জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদারকে হত্যার এজাহারভূক্ত আসামি ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা আবু তাহের সিকদার ও তার এক সহযোগীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ছাত্র শিবিরের সাবেক দুই নেতাসহ তিন আসামি গ্রেপ্তার হল।
শনিবার মধ্যরাতে ঢাকার তোপখানা রোডের আবাসিক এক হোটেলে এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে।
গ্রেপ্তাররা হল, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরী পাড়ার মৃত আফতাব উদ্দিনের ছেলে আবু তাহের সিকদার ওরফে তাহের সিকদার (৪৮) এবং একই এলাকার আবু বক্করের ছেলে ওবায়দুল করিম (৩৭)।
তাহের সিকদার ছাত্র শিবিরের কক্সবাজার জেলা শাখার সাবেক নেতা ও কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ‘ছাত্র শিবির মনোনীত প্যানেলের’ সাবেক সদস্য। তিনি পেশায় আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। এছাড়া ওবায়দুল করিম গ্রেপ্তার তাহের সিকদারের সহযোগী।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আবু তাহের সিকদার শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত দুই নম্বর আসামি। আর তার সহযোগী ছিল ওবায়দুল করিম।
গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০ টায় কক্সবাজার সদরের লিংকরোড স্টেশনে ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার ছোট ভাই কুদরত উল্লাহ সিকদারের ব্যক্তিগত অফিসে অবস্থান করছিলেন। তারা দুই ভাইসহ কর্মি-সমর্থকদের সঙ্গে নির্বাচনী আলাপ করছিলেন।
এসময় একদল দূর্বৃত্ত মোটর সাইকেল যোগে এসে তাদের লক্ষ্য গুলি ছুড়ে এবং কুপিয়ে জখম করে। এতে ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে। আহতদের মধ্যে কুদরত উল্লাহ’র অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওইদিন রাতে চিকিৎসকরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গত ৬ নভেম্বর সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকা জহিরুল ইসলামের অবস্থাও আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চিকিৎসকরা চমেকে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৭ নভেম্বর দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
কুদরত উল্লাহ গত ১১ নভেম্বর অনুষ্টিত ইউপি নির্বাচনে ঝিলংজা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ ছিল, ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে দূর্বৃত্তরা এ হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর হামলায় আহত কুদরত উল্লাহ সিকদার বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরের নুর পাড়া থেকে শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির নেতা ও সাংবাদিক ইমাম খাইরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছিল, ” ইমাম খাইর শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদার হত্যার পরিকল্পনা ও হত্যার মিশনে সরাসরি জড়িত ছিল। “
পরিদর্শক বিপুল বলেন, কক্সবাজার সদরে শ্রমিক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সিকদারের চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার পর থেকে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। শনিবার মধ্যরাতে মামলার এজাহারভূক্ত কয়েকজন আসামি ঢাকার তোপখানা রোডের আবাসিক একটি হোটেলে অবস্থান করছে খবরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে হোটেল কক্ষে অবস্থানকালে এজাহারভূক্ত এক আসামিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
” গ্রেপ্তার তাহের সিকদার শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত দুই নম্বর আসামি। ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে সে পলাতক ছিল। এছাড়া ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাহের সিকদারের সহযোগী ওবায়দুল করিমকেও হোটেল কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। “
পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের রোববার দুপুরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানান বিপুল।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply