শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
কাইছার সিকদার, কুতুবদিয়া : পরিবারে উপরি অর্থ যোগাতে কিংবা নিজেদের শখের হাত খরচ যোগাতই দিনদিন শিশুশ্রমের দিকে ঝুঁকছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার বিদ্যালয়গামী শিশু-কিশোরেরা। করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকে জীবিকার তাগিদে আবার অনেকে নিজেদের সৌখিন ব্যবহার্য জিনিসের প্রয়োজন মেটাতেই সহজ এবং আরামের পেশা হিসেবে ইজিবাইক চালানোকেই বেছে নিয়েছে তারা, কিন্তু পাশাপাশি সিএনজি অটোরিক্সা আর অন্যান্য যানবাহনে ও শিশু-কিশোরদের চালকের আসনে দেখা মিলে৷ ইজিবাইকগুলোর নেই ফিটনেস, রোড পারমিট ও চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে কারণে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনা ঘটাচ্ছে ।
শ্রমিক, মাছ ধরার জেলে, কৃষক অথবা ভ্যান চালকরা শ্রমবিহীন কর্ম হিসেবে তাদের মূল পেশা বাদ দিয়ে বর্তমানে নিয়মিত ইজিবাইক চালাচ্ছেন। এ সুযোগে ঐসব পরিবারের শিশু-কিশোরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে অর্থ উপার্জনের দিক হিসেবে ইজিবাইক নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে, অনেকে বাবার পরিবর্তে গাড়ি নিয়ে বের হয় কয়েক ঘন্টার জন্য৷ এদের ৮০শতাংশ চালকই জানেনা সড়কে গাড়ি চলাচলের নিয়মকানুন। তারপরও তারা নিয়মিত সড়ক ছাড়াও গ্রামের রাস্তায় ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে দ্রুতগতিতে বাইক চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোক্তভোগিরা জানান তারা প্রতিনিয়তই যানযট মাথায় নিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। তাদের অভিযোগ উপজেলায় চলাচলরত ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়মশৃংখলার তোয়াক্কা না করে সড়কে ইচ্ছামত ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত রিকশা চালাচ্ছে। আবার রাস্তায় ভাঙ্গাচুড়া অংশ পরিহার করে ভাল অংশ দিয়ে যেতে চায়, ফলে তারা ঘন ঘন রাস্তার এপাশ ওপাশ করে পথ চলে।
অন্যান্য গাড়ির চালকদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা সড়কের নিয়মকানুন জানেনা, হর্ণ এর মানে বুঝেনা, বিশেষ করে রাতের বেলায় অপরিকল্পিতভাবে বাতি লাগানোর কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির চালক সাময়িক অন্ধ হয়ে পড়ে দিকবিদিব হারিয়ে দূর্ঘনার মুখে পতিত হয়৷ সড়কে অতি সাবধানতার সাথে গাড়ি চালিয়ে ও সার্বক্ষণিক শঙ্খায় থাকতে হয় দূর্ঘটনার বিষয়ে৷
এবিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি এস.কে.লিটন কুতুবী বলেন, মহামারি করোনার প্রভাবে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে কিছু সংখ্যক দরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোরা অর্থ উপার্জনের দিক হিসেবে ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। এতে স্কুলমুখী শিশু-কিশোর দিন দিন শ্রমের ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
সরজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১০/১২ বছরের কম বয়সের কিশোর প্রায় ১০ ভাগের ১ ভাগ।
পথচারীদের উদ্রিতিতে জানা যায়, উপজেলার অভ্যান্তরে চলাচলরত ইজিবাইক দেখলে মনে হয় এটা যেন শুধু ইজিবাইকের উপজেলা।
এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাঃ ওমর হায়দার বলেন, ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় যত্রতত্র ইজিবাইক দূর্ঘটনার বিষয়ে কথা উঠেছে। দ্বীপের ৬ ইউনিয়নের ইজিবাইক এবং চালকদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রতিটি চালকদের গলায় নির্দিষ্ট কার্ড থাকবে। আশা করি কয়েকমাসের মধ্যে এটা শেষ করতে পারবো এবং শিশু বা অদক্ষ ড্রাইভার কাউকে পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে তিনি জানান।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply