নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য ১২৬ পরিবারের ২৫৭ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে বহনকারি সাতটি বাস চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশ রওনা হয়েছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় উখিয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠ থেকে এসব বাস রওনা দেয় বলে জানান অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দৌজা নয়ন।

তবে সপ্তম দফায় কতসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়া হবে তা নিশ্চিত করেননি।

গতবছরের ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলো থেকে প্রথমবারের মত রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়। এ পর্যন্ত ছয় দফায় মোট ১৮ হাজার ৩৩৪ জন রোহিঙ্গাকে । এ পর্যনম্ত ছয় দফায় মোট ১৮ হাজার ৩৩৪ জন রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করেছে সরকার।

এরপর দীর্ঘ আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে গত ৯ অক্টোবর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্মতি প্রকাশ করে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।

সমঝোতা স্মারকটি সই হওয়ার পর এই প্রথমবারের মত রোহিঙ্গাদের ১২৬ পরিবারের ২৫৭ জনের আরো একটি দল ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছে।

গতবছর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলো থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। এ নিয়ে গত ডিসেম্বর মাসের আগেই ভাসানচরে সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয় দিতে বাসস্থানসহ অবকাঠামোগত সবধরণের সুযোগ-সুবিধার নির্মাণ ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।

সামছু-দৌজা বলেন, বুধবার সকালে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য উখিয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠ হতে সপ্তম দফায় প্রথমদিনের প্রথম ধাপে রোহিঙ্গাদের বহনকারি বাসের একটি বহর চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের চ্ট্গ্রাম পৌঁছানোর পর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নেযা হবে। উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ১২৬ টি পরিবারের ২৫৭ জন রোহিঙ্গাকে সাতটি বাসে করে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছে।

“ উখিয়া ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাসে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশকারি রোহিঙ্গাদের জন্য একটি অস্থায়ী বুথ খোলা হয়েছে। সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের নাম নিবন্ধন করা হচ্ছে। যারাই যেতে আগ্রহ প্রকাশ করবে তাদের ভাসানরে নিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “

তাই ঠিক কতসংখ্যক রোহিঙ্গাকে এই দফায় নিয়ে যাওয়া হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

সামছু-দৌজা জানান, চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে রওনা দেওয়া রোহিঙ্গাদের বহনকারি বাসগুলো আগে ও পিছনে পুলিশের কড়া পাহারা দেয়া গাড়ী রয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ভাসোনচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বহনকারি কয়েকটি গাড়ীও সঙ্গে রওনা দিয়েছে।

মঙ্গলবার রাত থেকে বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে ভাসানচর যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের উখিয়া ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পানে নিয়ে আসা শুরু হয়। এই কার্যক্রম সকাল থেকেও অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে উখিয়া ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাস সহ আশপাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।