শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ধর্ম অবমাননার অজুহাতে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট অব্যাহত থাকায় সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক অধিকার প্রতিনিয়ত লংঘন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর।
সোমবার সকালে কক্সবাজার শহরে অভিজাত এক হোটেলে ‘বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, আমাদের সংবিধানে সকল নাগরিকদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে; যেখানে প্রত্যেক নাগরিক তার নিজস্ব ধর্ম বা বিশ্বাস পালনের সমান সুযোগ পাবে। অথচ আজকে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, পূজামন্ডপে হামলা করে মূর্তি ভাংচুর, হত্যা এবং নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। যাতে করে সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক অধিকার প্রতিনিয়ত লংঘন করা হচ্ছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও এই ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা অব্যাহত থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করে এ নারী নেত্রী বলেন, “ আমি হতভম্ভ ও লজ্জিত। শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী সমাজের উপরও অত্যাচার, নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উপর বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে অত্যাচার, নির্যাতনের বিষয়টিও বিদ্যামান।
‘আমাদের জীবন, আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের ভবিষ্যত’ প্রকল্পের অধীনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে সিমাভি নেদারল্যান্ডস সহযোগিতায় বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ তিন দিনব্যাপী বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার এই কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রকল্পটির অধীনে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় ১০ টি সংগঠন কিশোরী ও যুব নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার, সহিংসতামুক্ত জীবনযাপন আর মর্যাদাপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা এবং জীবন দক্ষতাবৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারি এই সংগঠন সমূহের মোট ৬৩ জন কর্মি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন।
সকল নাগরিকদের সমান সুযোগ তৈরীতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি নাগরিকদেরও কার্যকর ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে নারী নেত্রী রোকেয়া কবীর বলেন, “ আমাদের দেশের বড় একটি অংশ কিশোর-কিশোরী। তাদের স্বাস্থ্য, অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোও অবদান রাখছে। তারই অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের কিশোরী ও যুব নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সহিংসতামুক্ত, মর্যাদাপূর্ণভাবে জীবনযাপনে দক্ষ করে তুলতে এই প্রকল্পটি ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নে প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। ”
কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখেন, সিমাভি বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবা কুমকুম, নারী প্রগতি সংঘের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হিল ফ্লাওয়ারের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিলু কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, টংগ্যার এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ডা. পরশ খীসা, অনন্যা কল্যান সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাইপ্রু নেলী, গ্রাউসের নির্বাহী পরিচালক চাইসিং মং, তহজিংডং এর নির্বাহী পরিচালক চিংসিংপ্রু, প্রোগ্রেসিভ এর নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা, উইভ এর নির্বাহী পরিচালক নাইউপ্রু মারমা মেরী, কেএমকেএস এর নির্বাহী কমিটির সদস্য শাপলা ত্রিপুরা প্রমুখ।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply