শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ

কোভিড-১৯: দেশেই টিকা তৈরিতে উদ্যোগী সরকার

বিডিনিউজ : নতুন করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে তৈরির আগ্রহের কথা জানিয়ে কাঁচামাল সরবরাহের জন্য টিকা উদ্ভাবক একাধিক বিদেশি কোম্পানিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

দেশে ব্যবহৃত টিকা ‘কোভিশিল্ডের’ উদ্ভাবক অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে সরকার এবং অন্য টিকার উদ্ভাবকদের কাছে ওষুধ শিল্প উদ্যোক্তারা কাঁচামালের জন্য চিঠি দিয়েছে।

তবে শুধু কাঁচামাল পেলেই এই টিকা তৈরি সম্ভব হবে না। এর জন্য বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মান অনুযায়ী হতে হবে। সেজন্যও ডব্লিউএইচওর সহায়তা চেয়েছে সরকার।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, গত সপ্তাহে সরকারের পক্ষ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ‘চিঠি’ পাঠানো হয়েছে।

সরকার গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। শনিবার পর্যন্ত ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৩৪ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়ে গেছে। নিবন্ধন করেছেন ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ জন।

আগামী ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। তবে সময়মতো টিকার চালান না আসায় টিকাদান কার্যক্রম চলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশের একাধিক ওষুধ কোম্পানির টিকা উৎপাদনের সক্ষমতাকে সরকার কাজে লাগাতে চায়। এজন্য টিকার কাঁচামাল সিড বা বাল্কের ব্যবস্থা করে দিতে উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানকে সরকার অনুরোধ করেছে।

“আমরা ইতিমধ্যে চিঠি লিখেছি অ্যাস্ট্রেজেনেকার কাছে, যে আমাদের কাঁচামাল দাও। আমাদের টিকা তৈরির ফ্যাসিলিটি আছে। এখানে আমরা নিজেরা তৈরি করে ব্যবহার করতে পারব এবং চাইলে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারব। তাদের যেখানে ডিমান্ড আছে বা যেখানে দিতে বলবে, সেখানেও আমরা দিতে পারব।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে ওষুধের মান পরীক্ষার জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের গবেষণাগারের একটি অংশ গত বছরের মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। আরেকটি অংশের কিছু কাজ বাকি আছে।

এ বিষয়ে সহযোগিতার পর অনুমোদনের অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ট্কিার যদি অ্যাপ্রুভাল পেতে হয় বা বিদেশে পাঠাতে হয় তাহলে ডব্লিউএইচওর অনুমোদিত ল্যাবে টিকা অনুমোদিত হবে। এ কারণে এই ল্যাবেরও অনুমোদন লাগবে।

“ল্যাবের কেমিক্যাল অংশটা অনুমোদন পেয়েছে। তবে বায়োলজিক্যাল অংশটির কিছু কাজ বাকি আছে। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বলেছি, এটা তোমরাই করে দাও।”

এখন পর্যন্ত ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা ডব্লিউএইচওর অনুমোদন পেয়েছে।

ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুকতাদির শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টিকার সিড এবং বাল্ক রয়েছে এই চারটা কোম্পানির কাছে। সিড থেকে টিকা তৈরির সক্ষমতা আমাদের আছে। আমরা দুয়েকজনের কাছে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কেউ জবাব দিচ্ছে না।”

শুরুতে গুটিকতক কারখানা দিয়ে টিকার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যাপ্ত টিকা তৈরি সম্ভব বলে ভাবলেও পৃথিবীজুড়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টিকার চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ‘নতুন প্রস্তুতকারকদের’ তারা সুযোগ দেবে বলে আশাবাদী ওষুধ খাতের অন্যতম এই উদ্যোক্তা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, চীনের সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুৎনিক বাংলাদেশে টিকা সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিল। পরে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আগে চলে আসায় চীন ও রাশিয়ার বিষয়টি পিছিয়ে যায়। এখন টিকার সংকটের মুখে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিকল্প উৎস হিসেবে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

“আর বিকল্প উৎস হিসেবে রাশিয়া ও চায়না অফার দিয়েছিল। সেই অফারকে বেইজ করে আমরা আবার নতুন করে আলোচনা শুরু করেছি। সেসব দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে। টিকা দিতে পারবে কি না, কতটুকু দেবে, কীভাবে বিষয়গুলো আমাদের জানাতে বলেছি।”

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৮ জন মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। বাকি টিকা সরকারকে কিনতে হবে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশ।

ওই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। সে অনুযায়ী জানুয়ারিতে ৫০ লাখ ডোজ দেশে এলেও বিপুল চাহিদা আর বিশ্বজুড়ে টিকার সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে ফেব্রুয়ারির চালানে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডোজ হাতে পায়।

এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দুই দফায় ৩২ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে টিকা এসেছে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এই রোগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ হাজার ২১৩ জন। আক্রান্ত হয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জন। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের পর সংক্রমণ কিছুটা কমলেও এ বছরের মার্চের শুরুতে আবা বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন দৈনিক শনাক্ত রোগী আগের রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888