শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানির অবৈধ টোল আদায় বন্ধ রাখার পাশাপাশি বৈধ লাইসেন্সধারী বিট খাটানো প্রতিষ্ঠানকে টোল আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন ব্যারিস্টার নাইজুরুল আলম।
আব্দুস সামাদ এন্ড গং এর পক্ষে রিট পিটিশনটি দায়ের করেন এ আইনজীবী।
এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গত ২৫ জুলাই জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, টেকনাফের ইউএনও সহ বিজিবির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার নাইজুরুল আলম।
শাহপরীরদ্বীপ বিট খাটালে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানির টোল আদায়ের জন্য বাণিজ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত ২০১৯ সালে লাইসেন্স পায় আব্দুস সামাদ এন্ড গং। আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্টানটির টোল আদায়ের অনুমতি রয়েছে।
কিন্তু চলতি অর্থবছরে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রভাবশালী একটি মহলের যোগসাজশে শাহপরীরদ্বীপ বাজার ইজারাদার নেয়া প্রতিষ্টানকে দিয়ে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানির টোল আদায়ের ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।
প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের দাবি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স পাওয়া আবদুস সামাদ এন্ড গং এর অনুমতি গত মাসখানেক আগে বাতিল করা হয়েছে এবং এ সম্পর্কিত নথিপত্র প্রশাসনের কাছে জমা রয়েছে।
তবে আব্দুস সামাদ এন্ড গং প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ, প্রশাসনিক জটিলতা তৈরী করে প্রতিষ্টানটিকে টোল আদায় করতে দেয়া হচ্ছে না। অথচ একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ওখানে চাঁদা আদায় শুরু করেছে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে করিডোরে ব্যবসায়ীর মধ্যে উত্তেজনাও বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে আব্দুস সামাদ এন্ড গং এর পক্ষে শাহপরীরদ্বীপ করিডোরে পশু আমদানি বাবদ অবৈধ টোল আদায় বন্ধ এবং বৈধ প্রতিষ্টানটিকে টোল আদায়ের ব্যবস্থা করে দিতে হাইকোর্টের ভার্চুয়াল ডিভিশনে রিট পিটিশন দায়ের করেন ব্যারিস্টার নাইজুরুল আলম।
আইজীবী নাইজুরুল বলেন, আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে চলতি সপ্তাহের মধ্যে যে কোন দিন আবেদনটির শুনানীর দিন ধার্য্য করবেন।
“ এতে রিট পিটিশনটির শুনানী না হওয়া পর্যন্ত শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে পশু আমদানির অবৈধ টোল আদায় রাখার পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স প্রাপ্ত বৈধ প্রতিষ্ঠানকে টোল আদায়ের ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, টেকনাফের ইউএনও সহ বিজিবির সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে’ বলেন এ আইনজীবী।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রভাবশালী একটি মহল কর্তৃক অবৈধভাবে টোল আদায়ের বিষয়টি সত্য নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক আবদুস সামাদ এন্ড গং এর লাইসেন্স বাতিল করার পর শাহপরীরদ্বীপ বাজারের ইজারাদারই অস্থায়ীভাবে পশু আমদানির টোল আদায় করছে। এতে আদায়কৃত টাকা থেকে নির্ধারিত অংশই সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হচ্ছে।
তবে লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, এ ধরণের কোন লিগ্যাল নোটিশ হাতে আসেনি। হাতে আসার পর বিষয়টি পর্যালোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে দীর্ঘদিন থেকে গাবাদি পশু আমদানী হয়ে আসছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য পশু আমদানী করিডোরে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ শুল্ক আদায়ের স্বার্থে বিট আদায়ের লাইন্সেস প্রদান করে থাকলেও শাহপরীরদ্বীপে তা ছিল না। পরবর্তী বিষয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আসলে শাহপরীরদ্বীপের করিডোরের জন্য বিট খাটানোর লাইন্সেস প্রদান করেন আবদুস সামাদ এন্ড গংদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ২০১৯ সালে ৪ বছরের জন্য এ লাইন্সেসটি প্রদান করেন। কিন্তু কোরবানের ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানী অব্যাহত থাকলেও পশু আমদানীর ক্ষেত্রে বৈধ লাইন্সেসধারী বিট খাটানো প্রতিষ্ঠান কোন টোল আদায় করতে পাচ্ছেন না।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply