শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন
প্রথম আলো : গ্রামের নাম রাজাপুর। গ্রামের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছে ‘রাজাবাবু’। এই রাজাবাবু সাদা শরীরে কালো ছাপের একটি গরু (ষাঁড়)। ১১ ফুট ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এ গরুর ওজন ৩৮ মণ বলে দাবি এর মালিকের। তাকে দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন ভিড় করছেন।
রাজাবাবুর জন্ম জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। ভালোবেসে গরুটির মালিক তার নাম রেখেছেন রাজাবাবু। মালিকের নাম মোহাম্মদ লুৎফর রহমান। তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। চাকরির পাশাপাশি তিনি ছোট্ট একটি গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। দাপ্তরিক কাজ শেষ করেই তিনি ছুটে যান প্রিয় রাজাবাবুর কাছে।
এবার পবিত্র ঈদুল আজহায় রাজাবাবুকে হাটে তোলা হবে। বিশাল শরীরের অধিকারী হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই আশপাশের লোকজন এটিকে দেখতে ভিড় করছেন। সারা জেলার মধ্যে এটিই সব চেয়ে বড় গরু বলে দাবি করেন মালিক লুৎফর রহমান। তিনি রাজাবাবুর দাম হেঁকেছেন ২৫ লাখ টাকা।
লুৎফর রহমানের একটি গাভি ছিল। সেই গাভি থেকে রাজাবাবুর জন্ম। এটির বয়স সাড়ে তিন বছর। ওই গাভির ২০ কেজি দুধ হতো। রাজাবাবুর জন্য লুৎফর রহমান দুধ বিক্রি করতেন না। দেশীয় পদ্ধতিতে গরুটি হৃষ্টপুষ্ট করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যা করেন। ভালোবেসে গ্রামের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নাম দেন ‘রাজাবাবু’। দিনে দিনে ওজন বেড়ে গরুটি ৩৮ মণে এসে দাঁড়িয়েছে। তিনি কোরবানির ঈদে গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজাপুর গ্রামে বিশাল একটি বিলের পাশে লুৎফর রহমানের বাড়ি। বিলের পাড়ে একটি ছোট্ট ঘর। সেখানেই মোটা রশিতে রাজাবাবুকে বেঁধে রাখা হয়েছে। গরুর ওপরে চলছে একটি ফ্যান। রাজাবাবু ঘরে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বলে জানান তার মালিক। তাকে দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ ভিড় করেছে।
মেলান্দহের ভাবকী এলাকা থেকে পশুটিকে দেখতে এসেছেন আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি গরুটির ছবি তুলে নিলেন। তিনি বলেন, ‘গরুটি দেখতে অনেক সুন্দর। অনেক বড় গরু। এত বড় গরু এ জেলায় মনে হয় আর নেই। গরুর নাম রাজাবাবু শুনেই তিনি দেখতে আসছেন।’
মোহাম্মদ লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছোট একটি সরকারি চাকরি করি। ছোট থেকেই গরুর লালন-পালনের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। তাই চাকরির পাশাপাশি এই ছোট্ট খামার গড়ে তুলেছি। রাজাবাবু ছাড়াও এ খামারে আরও ১৫টি ছোট-বড় ষাঁড় রয়েছে। গরুটি ফিজিয়ান জাতের। এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গম, ধানের গুঁড়া, ভুসি, ভুট্টা ও খুদের ভাত। সব মিলিয়ে গরুটি প্রতিদিন প্রায় ৩০ কেজি খাবার খায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গরু লালন-পালন করতে আমার ভালোই লাগে। অফিস শেষ করেই রাজাবাবুর কাছে চলে আসি। পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে গরুটি পালন করেছি। গরুটির পেছনে অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। স্থানীয়ভাবে অনেক পাইকার এটির ১০ থেকে ১২ লাখ পর্যন্ত দাম বলেছেন। আশা করছি, ঢাকায় ২৫ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে পারব।’
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply