বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

বিনামূল্যের বই নিয়ে শঙ্কা

বাংলা ট্রিবিউন : সরকার নির্ধারিত সম্ভাব্য ব্যয়ের (প্রাক্কলন ব্যয়) চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম দামে দরপত্র জমা দিয়ে কাজ পেতে যাচ্ছে বেশকিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। ফলে বিন্যামূল্যের বইয়ের কাগজ ও ছাপা নিম্নমানের হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বিন্যামূল্যের বই নিয়ে এবারও ২০০৯ সালের মতো কেলেঙ্কারির সৃষ্টি হতে পারে।

তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘কাউকেই কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কার্যাদেশ চূড়ান্ত করেনি। কম রেটে বই ছাপা সম্ভব কিনা মূল্যায়ন কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে।’

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাসে প্রাথমিকের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব বই ছাপার দরপত্র খোলা (টেন্ডার ওপেন) হয়। আর বুধবার (১৫ জুলাই) মাধ্যমিকের ষষ্ঠ শ্রেণির ব্যকরণ সিরিজ বই ছাপার দরপত্র ওপেন করা হয়।  দরপত্রের শর্তানুযায়ী সর্বনিম্ন দরদাতা প্রেস মালিকরা কার্যাদেশ পাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি পিস বই ছাপানো হবে। এর মধ্যে মাধ্যমিকের বই রয়েছে প্রায় ২৪ কোটি ৪১ লাখ। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। প্রাথমিকের বইয়ের চাহিদা এখনও না এলেও গত বছরের চাহিদার ওপরে ভিত্তি করে প্রায় ১০ কোটি ৫৪ লাখ বইয়ের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে বিনামূল্যের প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপানোর জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, প্রাথমিকের সাড়ে ১০ কোটি বই ছাপাতে ৯৮টি লটে দরপত্র আহ্বান করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। ভারতের দু’টিসহ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই দরপত্রে অংশ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান বাজারে বই ছাপার উপযোগী (স্পেসিফেকেশন অনুযায়ী) এক টন কাগজের দাম পড়বে ৫২ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন প্রতিফর্মা ৬০ থেকে ৮০ পয়সা দরে দরপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এই হিসেবে প্রতিটন কাগজের দাম পড়বে ৩৬ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো। অথচ বর্তমান বাজারে ৮৫ ব্রাইটনেস ৬০ গ্রামের কাগজের দাম প্রতিটন  ৫২ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। প্রতিটন কাগজে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান দিয়ে মানসম্মত বই ছাপা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক ছাপাখানার মালিক ও সংশ্লিষ্টরা। 

তাদের অভিযোগ, কাজ পেতে যাওয়া বেশকিছু প্রেস মালিক তাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ পেতে যাচ্ছেন। যাদের দুইটি মাত্র মেশিন রয়েছে, তাদের অনেকেই কাজ পেয়েছেন ১৫টি লটের। সে ক্ষেত্রে কীভাবে কম দামে সঠিক সময়ে বই সরবরাহ করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বারতোপা প্রিন্টার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুপ কুমার দে বলেন, ‘প্রাক্কলিত রেটের ৩০/৩৫ শতাংশ কম রেট দিয়ে দরপত্র জমা দেইনি। কারণ, কম রেটে ভালো কাজ করতে পারবো না।  তাই আমাদের ছাপাখানা দেশের বৃহৎ হলেও আমরা কাজ পাচ্ছি না, এটাই বাস্তবতা।’

প্রেস মালিকদের অনেকেই বলছেন, ২০০৯ সালের মতো কেলেঙ্কারির পর পাহারা দিয়ে হলেও মানসম্মত বই নিতে হবে। তবে এসব বিষয়ে এনসিটিবি জানিয়েছে, এবার ২০০৯ সালের মতো কেলেঙ্কারি হবে না।  কাগজ ও বইয়ের মানে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাহিদার চেয়ে অনেক কমে দরপত্র জমা দেন। এর পর বইয়ের মান ঠিক রাখতে একটি স্টিয়ারিং কমিটি করা হয়। তখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে র‌্যাবকেও রাখা হয়েছিল। বিভিন্ন সময় অভিযানও পরিচালনা করতে হয়েছে।

এনসিটিবি’র সদস্য (অর্থ) যুগ্মসচিব মির্জা তারিক হিকমত বলেন, ‘সম্ভাব্য দর যখন ধরা হয়েছিল তখনকার চেয়ে এখন কাগজের দাম কম।  ৩০ বা ৩৫ শতাংশ কম রেট হলেও সেই হিসাব করেই দরপত্র জমা দিয়েছেন মূদ্রণ মালিকরা।  তবে রেট যা-ই হোক নিম্নমানের কাগজ ও ছাপা গ্রহণ করা হবে না।  পুকুর চুরির মতো লাভ হয়তো হবে না তাদের। কিন্তু আমরা আশা করি না কোনও কেলেঙ্কারি হবে।’

এনসিটিবি’র বিতরণ নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘কোনও কেলেঙ্কারির সুযোগ নেই।  আমরা অত্যন্ত কঠোর রয়েছি। কেউ যদি খারাপ বই দেওয়ার চেষ্টা করে তা পারবে না। গত বছর আমরা একজনের ৩০ হাজার বই বাতিল করেছি। একজনের ৪০ ফর্মার ৫০ হাজার বই, আরেক জনের ২৬ হাজারের বেশি বই কেটে ফেলা হয়েছে। নিম্নমানের বই আমরা নেবো না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888