বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা বর্জ্য সমুহ অবশেষে অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
তিনি জানিয়েছেন, সৈকতের বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা বর্জ্যের অবস্থা দেখতে মঙ্গলবার বিকেলে পরিদর্শনে যান কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের প্রটোকল ও পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইমরান জাহিদ খান। তিনি সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে প্যারাসেলিং পয়েন্ট পর্যন্ত বর্জ্যের অবস্থা দেখেন। কিভাবে বর্জ্য অপসারণ করা হবে তার কৌশল নির্ধারণ করেন। বুধবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হবে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, মঙ্গলবারও বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ৫ টি কচ্ছপের মৃতদেহ মিলেছে। এনিয়ে এ পর্যন্ত ৪০টির অধিক কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও সাগরের পানিতে অবমুক্ত করা হয়েছে ১১৬টির মতো আঘাতপ্রাপ্ত কচ্ছপকে।
মঙ্গলবার বিকেলে সৈকতে দরিয়ানগর থেকে প্যারাসেলিং পয়েন্ট পর্যন্ত আরও ৫টি মৃত কচ্ছপ ভেসে আসে। এছাড়াও বিরল প্রজাতির একটি জীবিত কচ্ছপকে উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের সদস্যরা।
সেভ দ্যা নেচার অব বাংলাদেশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আছাদুজ্জামান সায়েম বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সৈকতের দরিয়ানগর থেকে পয়েন্ট থেকে প্যারাসেলিং পয়েন্ট পর্যন্ত ৫টি মৃত কাছিম ভেসে আসে। পরবর্তীতে প্রশাসনকে অবহিত করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিদুয়ান হাসান ও সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশারফসহ আমরা কয়েকজন মিলে ভেসে আসা মৃত ৫টি কচ্ছপকে বালিয়াড়িতে পুতে ফেলা হয়েছে। আরেক বিরল প্রজাতির কাছিম পাওয়া গিয়েছে, তা স্পীড বোট যোগে গভীর সাগরে গিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
“গত ৪দিনে এ পর্যন্ত সৈকতে ৫০ টনের অধিক বর্জ্য ভেসে এসেছে এবং ৩০ থেকে ৪০ টি কাছিম মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।”
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, “গত শনিবার থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য, বোতল, ছেঁড়া জাল ও রশি কক্সবাজার সৈকতে ভেসে আসছে। যা সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে শুরু করে সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর ও হিমছড়ি পর্যন্ত। পরবর্তী এটি ইনানী সৈকত পর্যন্ত এসব বর্জ্য ভেসে এসেছে। এটি পরিবেশ অধিদপ্তর শনিবার থেকে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) পর্যন্ত মনিটরিং করছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে; ভেসে আসা বর্জ্য প্রায় ৫০ টনের অধিক হবে। এসব বর্জ্য অপসারণে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন এক সাথে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, “মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০টি কাছিম মারা গিয়েছে। যা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন মাটিতে পুতে ফেলেছে। এছাড়াও আহত অবস্থায় শতাধিকের বেশি কাছিম সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।”
অপরদিকে চট্টগ্রাম বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কক্সবাজারস্থ সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাগরে বর্জ্য ভেসে আসার ঘটনায় কাছিমের মৃত্যু হচ্ছে। তাই আমি সহ ৩ সদস্যের একটি টিম রোববার কক্সবাজার সৈকতে যায়। সেখানে প্রায় ৩০ টি মত কাছিমের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হয় এবং শতাধিকের বেশি কাছিমকে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ২টি কাছিম চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply