শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে লকডাউন আর সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও জেলায় সমুদ্র সৈকতসহ হোটেল-মোটেল এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঈদুল আজাহা পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জেলা কমিটির এক সভায় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কার্যক্রমের সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দিন আহমেদ।
সভায় হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর হার বিবেচনায় প্রশাসন গত ৬ জুন কক্সবাজারকে দেশের প্রথম রেড জোন ঘোষণা করে ফের লকডাউন করেছিল। পরে এক দফায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পাশপাশি ১১ জুলাই পর্যন্ত জেলার রেড জোন ঘোষিত এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
“ লকডাউনের পর সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও জেলাকে এখনো পুরোপুরি করোনামুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সরকারি-বেসরকারি অফিস-দপ্তরসহ সবধরণের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালু রেখে জীবনযাত্রা নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ”
সরকারের এ সিনিয়র সচিব বলেন, “ সভায় অংশগ্রহণকারি সর্বপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের আলোচনার প্রেক্ষিতে সমুদ্র সৈকতসহ হোটেল-মোটেল আর পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্রশাসন ঈদুল আজাহা পর্যন্ত বন্ধ নিয়েছে। এর পরবর্তীতেও সরকারি নির্দেশনা মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব প্রতিষ্ঠানসহ পর্যটনকেন্দ্রগুলো সীমিত আকারে চালু রাখা যাবে। ”
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসন গত ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার পৌর এলাকাকে দেশের ‘প্রথম রেড জোন’ ঘোষণা দিয়ে লকডাউন। পরদিন ৭ জুন থেকে রেড জোন ঘোষণা করা হয় টেকনাফ পৌর এলাকা, চকরিয়া পৌর এলাকা ও চকরিয়ার ডুলহাজারা স্টেশনের আশপাশের ৩ টি স্টেশন এবং উখিয়ার কোটবাজার স্টেশনসহ আশপাশের ৩ টি ওয়ার্ড। এরপর ৮ জুন থেকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করা হয় উখিয়ার সদর স্টেশন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কুতুপালং স্টেশন, বালুখালী স্টেশন ও থাইংখালী স্টেশন। পরবর্তীতে লকডাউনের মেয়াদ আরো ১০ দিন বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত ঘোষণা দেয়া হয়।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৪ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত জেলার রেড জোন এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবধরণের সরকারি-বেসরকারি অফিস-দপ্তর, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নিয়ে লকডাউনের পর সাধারণ ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১১ জুলাই শনিবার।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যরাসহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মাহবুব আলম তালুকদার, জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: অনুপম বড়ুয়া, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা: মহিউদ্দিন মো. আলমগীর, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ। এছাড়া সভায় জেলার পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানগণ সহ সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনীর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশগ্রহণ করেছেন।
এদিকে জেলায় গত ১৪ এপ্রিল প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫৫ জন রোহিঙ্গাসহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৭৮ জন। এদের মধ্যে ৫ জন রোহিঙ্গাসহ মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে দেড়-সহস্রাধিকের বেশী।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply