শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১ পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক টেকনাফের পাহাড়ে জেল ফেরত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার টেকনাফে ৭ লাখ টাকা মালামাল নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারি স্থল বন্দরের বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানি কারক সিআইপি ওমর ফারুক টেকনাফের নিকটবর্তী মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত : গুলি আসছে স্থলবন্দর ও আশে-পাশের এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

করোনা বাতাসেও ছড়াতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

প্রথম আলো: করোনাভাইরাস বাতাসে ছড়াতে পারে, এ কথা অবশেষে স্বীকার করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এত দিন ধরে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে গুরুত্ব দেয়নি। বাতাসে সম্প্রতি ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে সংস্থার আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ২০০ জনের বেশি গবেষক। তাঁরা স্বাস্থ্য সংস্থাকে একটি খোলা চিঠি লেখেন, যাতে জাতিসংঘের এই সংস্থাকে এ ঝুঁকি সম্পর্কে যথাযথ সতর্ক করতে ব্যর্থ বলে অভিযোগ দেওয়া হয়।

চিঠিতে ৩২টি দেশের ২৩৯ জন গবেষক স্বাক্ষর করেন। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে সংস্থাটি। তারা স্বীকার করেছে, বাতাসে ক্ষুদ্র কণাগুলো থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ উঠে আসছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ভিড়ের মধ্যে, আবদ্ধ পরিবেশে বা যেখানে আলোবাতাস কম ঢোকে, সেখানকার বাতাস থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়টি এড়ানো যায় না। এর প্রমাণের বিষয়ে যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে আবদ্ধ জায়গায় (ইনডোর) চলাচলে নীতিমালা জারি করা হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এত দিন বলা হচ্ছিল, সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি–কাশি থেকে যে মিহি জলকণা বা ড্রপলেটস ছড়ায়, সেখানে থেকে শুধু ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। তবে গবেষকেরা বলে আসছেন, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বাসপ্রশ্বাসের ড্রপলেটের ক্ষুদ্র সংস্করণ বা অ্যারোসল কণা দীর্ঘ সময় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এটি কয়েক মিটার পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে। এটি যেসব ঘরে আলো-বাতাস কম বা বাসসহ অন্যান্য বন্ধ জায়গায় বেশি মারাত্মক হতে পারে। এমনকি এসব জায়গায় ১ দশমিক ৮ মিটার দূরত্ব রেখেও কোনো লাভ হয় না।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে লেখা চিঠিতে সই করা কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ হোসে জিমেনজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, সংস্থাটি স্বীকার করুক, আমরা তাই চেয়েছিলাম। এটা স্বাস্থ্য সংস্থার ওপর কোনো চাপ নয়। এটা বৈজ্ঞানিক বিতর্ক। আমরা মনে করেছিলাম, এটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে, কারণ অনেক আলোচনার পরেও তারা এটা স্বীকার করছিল না।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কারিগরি প্রধান বেনডেট্টা অ্যালেগ্রাঞ্জি বলেছেন, যেসব প্রমাণ উঠে আসছে, তাতে বাতাস থেকে ভাইরাসটি ছড়ানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যেসব প্রমাণ পাওয়া যাবে, তা যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা হবে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হলে ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে, সে নির্দেশনায় পরিবর্তন আসতে পারে। এতে মাস্কের আরও বিস্তৃত ব্যবহার, রেস্তোরাঁ, পাবলিক পরিবহনসহ জনসমাগমস্থলে আরও কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আরোপ হতে পারে।

এর আগে ফিনল্যান্ডের গবেষকেরা কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে বাতাসে করোনাভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তাঁরা দাবি করেছিলেন, তাঁদের তৈরি এ মডেল নতুন করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়ায়, আমাদের তা আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গবেষণাটির জন্য ফিনল্যান্ডের আলটো ইউনিভার্সিটি, ফিনিশ মেটেরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট, ভিটিটিস টেকনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার ও হেলসিঙ্কি ইউনিভার্সিটির একটি যৌথ গবেষক দল কাজ করেছে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে কীভাবে কোনো ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের অঞ্চল ছেড়ে ছোট ছোট ভাইরাল কণা ছড়িয়ে পড়ে, এর মডেল তৈরিতে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করেছেন তাঁরা।

ফ্লুইড ডায়নামিকস নিয়ে গবেষণাকারী আলটো ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উইল ভুরিনেন এক বিবৃতিতে বলেন, করোনাভাইরাস ছড়ানোর মডেল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন, কোনো ব্যক্তির কাশির সময় তাঁর চারপাশে অ্যারোসল ‘মেঘ’ তৈরি হয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে ও মিশে যায়। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক মিনিট সময় লাগে।

এই সময়ের মধ্যে ওই ঘনীভূত মেঘের মতো এলাকা দিয়ে কেউ হেঁটে গেলে তত্ত্ব অনুযায়ী এসব ভাইরাল কণা তাঁর শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে পড়ে। করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কেউ কাশি দিয়ে চলে যেতে পারে, তবে তবে তিনি করোনাভাইরাস বহনকারী অত্যন্ত ছোট অ্যারোসোল কণাকে পেছনে রেখে যান। এসব কণা আশপাশের অন্যদের শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে ঢুকে যেতে পারে।

গবেষণার ভিত্তিতে ফিনল্যান্ডের গবেষকেরা এখন লোকজনকে যেসব এলাকায় বেশি জনসমাগম হয় এবং অন্দরের যেসব জায়গায় বেশি লোকজন চলাচল করে, সেগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888