শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪

বিশ্ব বিনোদনে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া

ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্মিত বাংলাদেশের ওয়েব সিরিজগুলো ইতিমধ্যে দর্শকদের টানতে শুরু করেছে। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ওয়েব সিরিজ।

প্রথম আলো : রাতে টেলিভিশনের সামনে পুরো পরিবার। বাবা-মা, দাদা-দাদির সঙ্গে সন্তান উপভোগ করছে নাটক। পারিবারিক এই ছবি এখন কেবল স্মৃতি। সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছে ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্ল্যাটফর্ম। পারিবারিক নাটকের বদলে ভিন্ন ভিন্ন বয়স ও রুচির মানুষের জন্য সেখানে থাকছে বিচিত্র সব বিনোদন উপকরণ। সেখানে নেই বাঁধাধরা প্রচার সময়। তাই একসঙ্গে বসে দেখারও প্রয়োজন নেই। যেকোনো সময় মুঠোফোনের পর্দা স্পর্শ করলেই হাজির বিনোদনের স্বর্গরাজ্য।

বিশ্ব বিনোদনে লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। ওটিটি এসেছিল বেশ আগেই। তবে করোনা মহামারির লকডাউনে জানা গেল, তারাই বিনোদনের ভবিষ্যৎ। আগামীর পৃথিবীতে মানুষের বিনোদনের দায়িত্ব নিয়েছে নেটফ্লিক্স, হুলু, ডিজনি প্লাস বা আমাজন প্রাইম ভিডিওর মতো প্ল্যাটফর্ম। এখনকার তরুণ নির্মাতারাও সেটাই মনে করেন। আশফাক নিপুণ বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে বর্তমান বাস্তবতা ওটিটি। তবে আমাদের দেশের এটি ভবিষ্যৎ। কারণ, আমাদের এখানে এটি কেবল হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাঁটতে শুরু করেছে। আমাদের সংস্কৃতিগাথা জারি গান, পথনাটকের মতো পরিবেশনা শিল্পের সঙ্গে। যখন টেলিভিশন এসেছিল, আমরা তাতে অভ্যস্ত হয়েছি। যখন ইউটিউব এল, তখন সেদিকে অভ্যস্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ল। এখন যেহেতু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এসেছে, মানুষ সেদিকেই এগিয়ে যাবে।’

বাংলাদেশের ওয়েব সিরিজগুলো ইতিমধ্যে দর্শকদের টানতে শুরু করেছে। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ওয়েব সিরিজগুলো ইতিমধ্যে দর্শকদের টানতে শুরু করেছে।

পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখার যে প্রবণতা, সেটা ধীরে ধীরে ম্লান হবে বলে মনে করেন নিপুণ। তিনি বলেন, ‘আগে সবাই মিলে টিভি দেখার সময় কমিউনিটি ওয়াচিং করতাম, এখন সেটা সম্ভব নয়। এখন সবকিছু পারসোনালাইজ হয়ে যাচ্ছে। একে কিউরেট করার জন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বেস্ট। কারণ, দেখা যাচ্ছে, আশি বা নব্বইয়ের দশকে টিভিতে পরিবারের প্রায় সবাই একই কনটেন্ট দেখতেন একই সময়ে। এখন পরিবারে ছয়জন সদস্য ছয় রকমের কনটেন্ট দেখতে পারছেন।’ তবে এই ধারা পারিবারিক বন্ধনকে দুর্বল করে ফেলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

নতুন সব প্রযুক্তির হাত ধরে বদলে যাচ্ছে কনটেন্ট পরিবেশনের ধারা। একসময় বাকের ভাইয়ের জন্য রাস্তায় মিছিল হতো, এখন ‘পাতাল লোক’ বা ‘সেক্রেড গেমস’ নিয়ে উত্তেজনায় ভরে ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান বলেন, ‘পৃথিবী দিন দিন পরিবর্তিত হবে। সুতরাং আমরা একটা ভার্সন থেকে অন্য ভার্সনে যাব। তবে প্রথম কথা হলো, অডিয়েন্স আরাম করে ভালো কনটেন্ট দেখতে চায়। এই দুটো জিনিস যেখানে থাকবে, দর্শক সেখানেই যাবে।’ তবে সবাই যে ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই ঝাঁপ দেবেন, তা নয়। যাঁরা এত দিন পুরোনো পদ্ধতিতে কনটেন্ট পরিবেশন করে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে নতুন পরিবেশকদের দ্বন্দ্ব তৈরি হবে। যেমন ভারতে সুজিত সরকারের গুলাবো সিতাবো সিনেমাটি সরাসরি ওয়েবে মুক্তি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রেক্ষাগৃহের মালিকেরা।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ওয়েব সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত
ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ওয়েব সিরিজ।

এ প্রসঙ্গে নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘যেকোনো ইকোনমি যখন শিফট হয়, তখন প্রদর্শন, প্রযোজনা ও বণ্টন—সবকিছুরই ইকোনমিক শিফট হয়। নির্মাণকৌশল যেমন পরিবর্তন হয়, তেমনি যারা এর বাণিজ্য করে, তাদেরও ইকোনমিক শিফট হয়। কারণ, এখানে নতুন ধরনের মানুষ আসে। তখন পুরোনোদের সঙ্গে নতুনদের একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এটা পৃথিবীজুড়ে হচ্ছে। এখন যে লড়াইটা চলবে, সেটা হচ্ছে নতুনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সনাতনী নির্মাণশৈলী ও কৌশলের।’

অমিতাভ মনে করেন, সিনেমায় গল্প বলার জন্য বাংলাদেশের মতো দেশে সম্ভাবনার জায়গা ওয়েব। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘সিনেমা হলে মানুষ যায় একটা সিনেমাটিক এক্সপেরিয়েন্সের জন্য। যা থ্রিডি সিনেমা বা অ্যাভেঞ্জার্স বা বাহুবলীতে আছে। ওই অভিজ্ঞতা যদি সিনেমায় থাকে, তাহলেই মানুষ সিনেমা হলে যাবে। ওই অভিজ্ঞতা আমাদের বাংলা সিনেমায় নাই। বাংলা সিনেমা মানবিক। মানুষের সম্পর্কের গল্প বলে। সুতরাং তৃতীয় বিশ্বের দেশের যে সিনেমা, তার সম্ভাবনা ওয়েবেই।’

এখনো সিনেমা হল খোলার কোনো নিশ্চয়তা নেই, সিনেপ্লেক্স প্রস্তুত থাকলেও খোলার অনুমতি মেলেনি। এদিকে মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে বেশ কিছু সিনেমা। আবার তরুণ নির্মাতারা ওয়েব সিরিজ নির্মাণে আগ্রহও দেখাচ্ছেন। ওয়েব সিরিজে বাড়ছে দর্শকও। সবকিছু মিলে বিনোদনের এখন নতুন আঙিনা হতে যাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888