বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০১ অপরাহ্ন
বিডিনিউজ: করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের মালিক সংবাদকর্মীদের প্রতি মানবিকতা দেখাতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে করোনাভাইরাসকালীন সময়ের সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “করোনাকালে বিভিন্ন মিডিয়ার মালিকপক্ষকে প্রথম থেকে অনুরোধ জানিয়ে আসছিলাম যাতে কোনো সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা নাহয় এবং পাওনা যাতে পরিশোধ করা হয়।
“এরপরও যেখানে প্রধানমন্ত্রী মানবিকতার উদাহরণ দিয়েছেন সেখানে অনেক জায়গা থেকে অনেকে মানবিকতা দেখাতে পারেননি, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে মালিক-সম্পাদকদের ভূমিকায়ও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, “নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা না করার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুইটা মামলা হয়েছে। তথ্য সচিব দুই মামলাতেই আসামি। প্রথম মামলা করা হল- তথ্য মন্ত্রণালয় এটা করার অধিকার রাখেনা। পরবর্তীতে করা হল পূর্বের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এটা অগ্রবর্তী করা যাবেনা।”
নবম ওয়েজ ঘোষণা করাই চ্যালেঞ্জ ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পত্রিকার সম্পাদক-মালিকপক্ষ নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেভাবে এগিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল সেভাবে আসেননি, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।”
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী।
হাছান মাহমুদ বলেন, “করোনাভাইরাসের শুরুতে চট্টগ্রামে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নানা সমস্যা ছিল। আমি তিনবার এসে এখানে সমন্বয় সভা করেছি। চট্টগ্রামের প্রশাসন ও সমস্ত মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা ছিল। পরিস্থিতি দুইমাস আগে যা ছিল তার চেয়ে এখন অনেক ভালো হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য ইউএসটিসির বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ এর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা করতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করলে তিনি আমাকে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত অর্থ থেকে আরও দুই কোটিসহ মোট চার কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
“সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে কারা সহায়তা পাবেন তারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোই তালিকা করেছেন। যারা ইউনিয়নের বাইরে আছেন তাদের জন্য জেলা প্রশাসকের সুপারিশ নিয়ে অন্তর্ভুক্তের অপশন রাখা হয়েছে। প্রথম দফায় দেড় হাজার সাংবাদিককে এই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে ২৫০ জন সাংবাদিক পাচ্ছেন। এবারে যারা বাদ যাবেন তারা পরবর্তীতে পাবেন।”
অন্ধের মতো সরকারের সমালোচনার মনোবৃত্তি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অবশ্যই সরকারের ভুল যে কেউ ধরিয়ে দেবে। একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এটি থাকতে হবে, আমরা সেটিতে বিশ্বাস করি। সমালোচনা কাজ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা বা ‘যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা’ সেই মনোবৃত্তি থেকে সমালোচনা কখনও সহায়ক নয়।”
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ১৩৬ জন সাংবাদিককে সহায়তার চেক এবং ২৫ জন সাংবাদিককে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের নিয়মিত সহায়তার চেক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।
মহামারীকালীন সহায়তার চেকে প্রতিজনকে দশ হাজার টাকা এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের চেকে চট্টগ্রামের ২৫ জন সাংবাদিককে ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply