শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

স্বাভাবিক হচ্ছে ঢাকার জীবন?

বাংলা ট্রিবিউন : এক মাস আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল যোগাযোগ উন্মুক্ত ও নিয়ম মেনে চলাচল দোকান-পাট খুলে দেওয়ার পরও কি স্বাভাবিক হয়ে হয়েছে রাজধানী ঢাকা? সরেজমিনে দেখা যায়, এখনও পুরোদমে যান চলাচল শুরু হয়নি, প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যাও কম, দোকানপাটে নেই স্বাভাবিক সময়ের ভিড়। ঢাকাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করে তুলতে দোকান-পাট খোলা রাখার সময়ও কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে। এরপরও স্বাভাবিক জীবনে ফেরেনি এখনও।
বৃহস্পতিবারের (২ জুলাই) হিসাব বলছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার ১৯ জন। এটিই এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৩৮ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো এক হাজার ৯২৬ জনে।

এ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সীমিত চলাচলের নতুন নির্দেশনায় বাসস্থানের বাইরে থাকার সময় সীমা তিন ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, কর্মস্থলে যাতায়াত, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসাসেবা, মরদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) ছাড়া বাসস্থানের বাইরে যাওয়া যাবে না। আগের নির্দেশনায় রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ ছিল।

করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ছুটি শেষে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত চলাচল সীমিত করে অফিস-আদালত এবং গণপরিবহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। সেই মেয়াদের পরে ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে এই নিয়ম ৩ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অফিস সময়ের বাইরে ঢাকার প্রধান সড়কগুলোয় যান চলাচল সীমিত। বেলা ১১টার পরে পুরো মিরপুর সড়কে কোন সিগন্যালে গাড়ি থামাতে হয় না এখনও। রাজধানীর বিজয় সরণী, কাওরান বাজার, মহাখালীর কোনও কোনও জায়গায় কিছু ভিড় দেখা যায় বটে তবে তা স্বাভাবিক সময়ের মতো নয়।

এখনও বেশকিছু অফিস বাসা থেকে কর্মীদের কাজের সুযোগ অব্যাহত রেখেছে। এমআরডিআই-এর প্রধান হাসিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার কাছে কর্মী সুরক্ষা নিশ্চিত করা কাজেরও আগে। আমি তাদের বেতন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি ও পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা দিতে চাইছি। আর সেটা করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজের গতি বৃদ্ধির কাজও করছি। মনে রাখা জরুরি আমার কর্মী যদি অফিসে আসেন তার পরিবারকে অনিরাপদ করে দেওয়া হয়। সেটি নিশ্চয়ই এই সময়ে আমরা চাইবো না। যখন কিনা প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আরও এক দুই মাস পরিস্থিতি দেখার পরে অফিস খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

স্বাভাবিক সংখ্যক গণপরিবহন কবে নাগাদ চালু হবে—এমন প্রশ্নে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকর এনায়েত উল্যাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যাত্রীর অভাবেই অনেক মালিক  পরিবহন কমিয়ে দিয়েছেন। মানুষ এখনও স্বাভাবিক সময়ের মতো বের হচ্ছে না। এখানে অন্য আর কোনও কারণ নেই।

যে এলাকাতে সংক্রমণ বেশি সে এলাকাতে কঠোর লকডাউন করতে হবে এ কথা বিশেষজ্ঞরা বারবার বলে আসছেন কিন্তু সেটা মানা হচ্ছে না মন্তব্য করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এখন যে পরিস্থিতি তাতে রাজধানীকে স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া নেওয়া ঠিক হচ্ছে না। পাঁচটা পর্যন্ত শপিং মল খোলা থাকায় মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল না মন্তব্য করে ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, জনসমাগম এমনিতেই কম। কেনাকাটা করতে মানুষ তেমন যাচ্ছে না, তাহলে কিসের জন্য এই স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া।

এ পরিস্থিতিতে ঢাকা স্বাভাবিক করা কৌশল হিসেবে ঠিক নেই উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রিভেনটিভ মেডিসিন চিকিৎসক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের থিওরি হলো যেসব রোগ মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় সেটা যত বাড়ে বিধিনিষেধ তত কঠোর হতে হয়। সূচক ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হলে বিধিনিষেধ পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সেটি ঘটেনি। সূচক যখন ঊর্ধ্বগামী তখন আমরা স্বাভাবিক করার নামে বিধিনিষেধ তুলে নিতে শুরু  করেছি। এর মানে এই যে আমি আমার মানুষদের নিয়তির হাতে ছেড়ে দিচ্ছি। সক্রিয়ভাবে রোগকে থামানোর বিজ্ঞানভিত্তিক যে প্রয়াস সেটা রুখে দিচ্ছি। হঠাৎ করোনা টেস্টে ফি আরোপটাও সেটাই প্রমাণ করে। এসব সিদ্ধান্ত মানুষের জন্য আত্মঘাতী হয়ে উঠছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888