নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ উপজেলার পানখালী এলাকায় এবার ‘মুক্তিপণের দাবিতে’ পাঁচ কৃষককে অপহরণ করেছে দূর্বৃত্তরা।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
অপহৃতরা হল, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. জিহান (১৩), একই এলাকার ফকির আহম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২), আব্দু রকিমের ছেলে মোহাম্মদ নুর, মৃত মো. ছৈয়দুল্লাহ এর ছেলে মো. শামীম ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান।
ভূক্তভোগী স্বজনের বরাতে রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বুধবার রাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ী এলাকা সংলগ্ন ফসলি ক্ষেত পাহারা দিচ্ছিল স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ভোররাতে এক পর্যায়ে গহীন পাহাড়ী এলাকা দিক থেকে মুখোশধারী একদল দূর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে ৫ জনকে তুলে নিয়ে যায়। পরে সকালে ভূক্তভোগীদের স্বজনরা ঘটনাটি তাকে অবহিত করেন।
অপহৃত মো. জিহানের মা ফাতেমা বেগম বলেন, তার ছেলেসহ ৫ কৃষককে অপহরণের ঘটনাটি সকালে জানতে পারেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছেন। দুপুরের দিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অপহৃতদের ছেড়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
“এর মধ্যে মোহাম্মদ নুরের স্বজনের কাছে ১৫ লাখ টাকা এবং অপর চারজনের স্বজনদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই দুর্বৃত্ত।”
এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী এলাকায় ফসলি ক্ষেত থেকে ৫ কৃষককে অপহরণের ব্যাপারে পুলিশ অবহিত নয়। তবে স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে ঘটনাটি শুনেছেন। ঘটনার ব্যাপারে ভূক্তভোগীদের স্বজনরা পুলিশের কাছে লিখিত বা মৌখিক কোন ধরণের অভিযোগ পাননি।
তারপরও ঘটনাটি শোনার পরপরই পুলিশের একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে গত ৯ মার্চ টেকনাফ উপজেলার হ্নীলায় অপহৃত মাদ্রাসা পড়–য়া শিশু শিক্ষার্থী ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) ১২দিন পরও উদ্ধার হয়নি। যদিও পুলিশ অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও সংঘবদ্ধ চক্রের নারী সদস্য সহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপহৃত শিশু ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এর ছেলে। সে পূর্ব পানখালী এলাকার আবু হুরাইরা (রাঃ) মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। গত ৯ মার্চ দুপুরে ক্লাশ শেষে বাড়ী ফিরছিল আবু হুরাইরা (রাঃ) মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ। মাদ্রাসার কিছুটা দূরে পৌঁছলে পথিমধ্যে তাকে থামিয়ে বোরকা পরিহিত এক নারী দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফেটে যাওয়ার কথা জানায়। পরে হাসপাতালে মাকে দেখতে যাওয়ার কথা বলে ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ’কে ওই নারী অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় ভূক্তভোগী শিশুর মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের পর গত ১০ মার্চ মামলাটি নথিভূক্ত করেন।
পরে গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে অটোরিকশাসহ চালক নাছির উদ্দিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পরবর্তীতে সিসিটিভির ফুটেজ ও গ্রেপ্তার অটোরিকশা চালকের স্বীকারোক্তি মতে গত ১২ মার্চ টেকনাফ উপজেলার মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ অপহরণকারি চক্রের আরও ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তাররা হল- টেকনাফ উপজেলার মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ খানের স্ত্রী উম্মে সালমা (২৪), একই ক্যাম্পের বাসিন্দা লায়লা বেগম, কোবরা বেগম ও মোহাম্মদ হাশেম এবং উদ্ধার করা অটোরিকশার চালক নাছির উদ্দিন (২৬)। এরা সকলেই রোহিঙ্গা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা সকলেই কারাগারে রয়েছে।
যদিও ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান ওসি ওসমান গনি।
অপরদিকে, এদিকে, গত ৫ ফেব্রæয়ারি কক্সবাজার সদর থেকে অপহৃত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রাশিকুল ইসলাম (১৫) কে এখন উদ্ধার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও এর মধ্যে র্যাব এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত ৫ ফেব্রæয়ারি চকরিয়া ফাঁসিয়াখালি দারুল উলুম মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাশিকুল ইসলাম নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রæয়ারি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানায় যে, রাশিকুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে দুই লক্ষ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হবে। এরপর একাধিক মোবাইল নম্বরে অপহরণকারীদের পর্যায়ক্রমে একাধিকবারে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দেয়া হয়। এরপর পুনরায় আরও দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে চক্রটি। এব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করা হয়েছে। যার নং ৭৬১, তাং ১০/০২/২০২৪।
এ ঘটনায় র্যাব ২ মার্চ রাতে উখিয়া উপজেলার থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এরা হলেন, উখিয়ার ১২ নম্বর ক্যাম্পের আলী হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (৩৪), একই ক্যাম্পের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে আমিন উল্লাহ (১৯) ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মুহুরী পাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. তারেক (১৮)। গ্রেপ্তার ৩ জন র্যাবকে জানিয়েছেন এ শিশুকে মিয়ানমারের পাচার করা হয়েছে। ওখানে জিন্মি আছে শিশুটি।
এনিয়ে ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ শুধু মাত্র টেকনাফে কেন্দ্রিক অপহরণের ঘটনা ঘটে ১০৬ টি। যার মধ্যে ৫৬ জন স্থানীয় এবং ৫০ জন রোহিঙ্গা। যেখানে ৪৬ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এ পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি ২ শিশুর।
নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…
চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…
নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…