নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার জেলায় ৩৮ হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৫ হাজারের বেশি ঘর। জেলার ৯ টি উপজেলার ৭০ টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভায় অন্তত ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সব চেয়ে বেশি তান্ডব হয়েছে বিদ্যুৎ লাইনের উপর। ছিন্ন-ভিন্ন বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কারণে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভার আশংকি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হলে বন্ধ রয়েছে বেশিভাগ এলাকা।

বুধবার সন্ধ্যা ৭ টায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজারের ৫ হাজার ১০৫ টি কাঁচাঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ভেঙেছে ৩২ হাজার ,৭৪৯ টি ঘর। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ৩৩ কে.ভি লাইনের ১৭৪টি, ১১ কে.ভি লাইনের ১৮০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ২৩টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। ৪৯৬টি স্পটে তার ছিড়ে গেছে। ১৮৩৮টি মিটার নষ্ট হয়েছে। ৮০০টি স্পটে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পিডিবি ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কক্সবাজার পৌরসভা/কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে উক্ত উপজেলাসমূহের সাথে মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতাধীন পেকুয়া উপজেলার ৭টি ঘরের টিন সম্পূর্ণ উড়ে গেছে এবং চকরিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার
প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত ১টি ব্রিজ সম্পূর্ণ বেঁকে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে টানা ১৫ ঘন্টা পর বুধবার বিকাল ৩ টা থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। কিন্তু ফোন কল ইনকামিং, আউটগুনিং এর ক্ষেত্রে জটিলতা পুরো কেটে উঠেনি। একই অবস্থা ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও। মঙ্গলবার রাত ১২ টা থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, মোবাইল কোম্পানির কর্মকর্তারা দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন বলে আশ্বস্ত করেছে।

টানা ২৪ ঘন্টা পর কক্সবাজার পৌরসভার আংশিক এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা থেকে বিদ্যুৎ চালু হলে অন্যান্য সমুহ এখনও বন্ধ আছে।

কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের গণি বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে উপড়ে গেছে অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি। তার ছিঁড়ে রাস্তা-ঘাট ও বসতিতে পড়ে রয়েছে। এখন হোঁট করে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিলে প্রাণহানি ঘটতে পারে, তাই আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

আব্দুল কাদের গণি বলেন, “এখন ৩টি সাব স্টেশন চালু করা হয়েছে। এরপর প্রধান সড়কগুলোতে কাজ শুরু হয়ে গেছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। পুরো কক্সবাজারে বিদ্যুৎ চালু হতে অন্তত দু’দিন সময় লাগবে।”

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…

2 days ago

চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…

2 days ago

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…

2 days ago

সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…

3 days ago

পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…

4 days ago

সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…

4 days ago