কক্সবাজার জেলা

ঘূর্ণিঝড় হামুন :লণ্ডভণ্ড জনপদ, অচল কক্সবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজার। নেই বিদ্যুৎ, নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক। একই সঙ্গে সড়ক-উপসড়কে গাছ উপড়ে বন্ধ যানবাহন চলাচল। দেয়াল ও গাছ চাপায় প্রাণ গেছে ৩ জনের। আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক। 

নিহতরা হলেন, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার খুইল্ল্যা মিয়ার ছেলে আবদুল খালেক (৪০), মহেশখালী এলাকার হারাধন দে (৪৫) ও চকরিয়া বদরখালী এলাকার জাফর আহমদের ছেলে আসকর আলী (৪৭)। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টার পরই ঘূর্ণিঝড় হামুন আঘাত হানে। এতে উপড়ে যায় গাছপালা ও ঘরবাড়ি। কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়,  সদর হাসপাতাল সড়কেই উপড়ে পড়েছে ১৫টির বেশি গাছ। একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে বৈদ্যুতিক তার বন্ধ যানবাহন চলাচল। নেই বিদ্যুৎ। 

শুধু এই সড়কই নয়; কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে উপড়ে পড়েছে বিশাল আকৃতির গাছ। বৈদ্যুতিক খুঁটিও উপড়ে পড়েছে সড়কে। ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার শহরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও একই অবস্থা। চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ। 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা গুলোতে সড়ক উপসড়কে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুটি। বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক না থাকায় কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কক্সবাজার অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের কাজ চলছে। 

চকরিয়ায় বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বখতিয়ার উদ্দিন রুবেল জানিয়েছেন, বাতাসের তান্ডবে উপকূলীয় ইউনিয়নের অনন্ত ২ শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে। আসকর আলীর মৃত্যু ছাড়াও আহত হয়েছে ২০ জনের বেশি।

তিনি জানান, আবহাওয়ার বার্তা ও প্রশাসনে প্রস্তুতি মিলে অনেক আগেই আঘাত এনেছে হামুন। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কল্পনার বেশি।এছাড়াও পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, ডেমুশিয়া, ও কোনাখালী ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময়  ঘরের টিন, গাছ ডালপালা উড়ে পড়ে  অন্তত ১০ জন লোক আহত হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানায়।

মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ কামাল জানিয়েছেন, মহেশখালীর কুতুবজোম, হোয়ানক, ধলঘাটা, মাতারবাড়ি, কালারমারছড়া ইউনিয়ন লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঘর, গাছ ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। ধলঘাটার কিছু এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছিল। পরে নেমে গেছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রধান সড়ক ও উপসড়কে গাছ ভেঙে পড়ে অনেক অংশ এখনও বন্ধ। তা সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। পৌরসভায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ভেঙে গেছে আড়াই শতাধিক ঘর। সমিতিপাড়া, ফদনার ডেইল, নাজিরারটেক এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানতে কাজ চলছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় জানতে বিলম্ব হচ্ছে। 

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

12 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

16 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

17 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

1 day ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

2 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

2 days ago