টেকনাফে আরও এক যুবককে অপহরণ; অপহৃত অপর জনের খোঁজ নেই ৫ দিনেও

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের পাহাড়ে অপহৃত সোনা আলী (৪৭) এর কোন সন্ধান মিলেনি ৫ দিনেও। এর মধ্যে আবুল হাশেম (২২) নামের আরও এক যুবককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।

তিনি উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীযাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিমের ছেলে।

রবিবার রাত ১০ টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীয়াপাড়ার (খামারপাড়ার) পাহাড়ের পাদদেশে বসতঘর থেকে বাহির হয়ে প্রশ্রব করতে গেলে তিনি অপহরণের শিকার হন।

এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওযার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াস।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াস কক্সবাজারটাইমসকে বলেন, অপহৃত যুবক আবুল হাশেম আমার চাচাত ভাইয়ের ছেলে। সে টেকনাফ পৌরসভার একটি খাবার পানি সবরবাহ প্রতিষ্টানে চাকুরী করেন। সে সন্ধ্যায় টেকনাফ থেকে বাড়িতে আসেন। রাতে ভাত খেয়ে ঘুমাতে যাবার আগে প্রশ্রব করার জন্য ঘর থেকে বাহির হলে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা অস্ত্রেরমূখে তাকে জিম্মি করে টেনেহিঁচড়ে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাবার সময় সে চিৎকার করে উঠেন। এসময় বাড়ির লোকজন বাহির হয়ে টচ লাইটের আলোতে দেখতে পান মুখোশধারী কিছু লোকজন হাশেমকে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান কক্সবাজারটাইমসকে বলেন, ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তিনি অপহরণের বিষয়টি শুনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার অপহৃত সোনা আলীর ৫ দিনেও কোনো সন্ধান মিলেনি। ফোন করে কোনো ধরনের মুক্তিপণও দাবি করেনি সন্ত্রাসীরা। এতে করে আতঙ্কেগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন ভোক্তভোগী পরিবার।

অপহৃত ব্যক্তি উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের নাজির হোসাইনের ছেলে এবং তিনি একজন পান বরজের চাষী।

সোমবার সকাল পর্যন্ত তার কোনো ধরনের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা পাহাড়ের পাদদেশে পানবরজে কাজ করার সময় তাকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে গহিন পাহাড়ে ভেতরে নিয়ে যান। সোনা আলীর হাতে কোনো মোবাইল ফোন নেই এবং ঘরে থাকা মোবাইল ফোন নম্বরটিও তার জানা নেই। হয়ত এ কারণে সন্ত্রাসীরা ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করতে পারছে না। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে অপহৃত স্ত্রী সখিনা খাতুন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ১৪-১৫ জনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ দায়ে করেছেন।

অপহৃত পান বরজের চাষীর স্ত্রী সখিনা খাতুন কক্সবাজারটাইমসকে বলেন, এটা মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে ৫ দিন হলো। তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে নিয়ে আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।

জানতে চাইলে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান কক্সবাজারটাইমসকে বলেন, অপহৃত ব্যক্তির স্ত্রী বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।পুলিশ তাকে উদ্ধার করার জন্য কয়েকটি স্থানে অভিযানও চালিয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই ২ জন ছাড়া ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ এর ৯ অক্টোবর পর্যন্ত শুধু মাত্র টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণের ঘটনা ঘটে ১২৯ টি। যার মধ্যে ৬৮ জন স্থানীয় এবং ৬১ জন রোহিঙ্গা। যেখানে ২৯ জন মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের কোন তথ্য পাওয়া না গেলে অপর ১ শত জন সকলেই মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করে আসছে।

nupa alam

View Comments

Recent Posts

কক্সবাজারে গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ থেকে ভাংচুরের ঘটনায় মামলা : গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল থেকে কক্সবাজার শহরের…

19 hours ago

সাগর থেকে অন্তত ২২ জেলে সহ ৪টি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগর থেকে অনন্ত ২২ জন জেলে সহ ৪টি মাছ ধরার…

21 hours ago

টেকনাফে অপহৃত দুই জন মুক্তিপণে ছাড়া

টেকনাফ প্রতিবেদক : টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবনিয়া এলাকার থেকে অপহৃত দুইজনকে ৩ লাখ ৩০…

23 hours ago

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আবারও স্থলমাইন বিস্ফোরণে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

রামু প্রতিবেদক : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আবারও আরাকান আর্মি পুতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে মো: তৈয়ব…

23 hours ago

চকরিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণে বৃদ্ধের মৃত্যু

চকরিয়া প্রতিবেদক : চকরিয়ায় বন্যহাতির আক্রমনে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী…

23 hours ago

গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে কক্সবাজারে বিক্ষোভ : ইজরায়েলি পণ্যের সাইন বোর্ড থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে সোমবার…

2 days ago