মিয়ানমারের আস্তানা থেকে ফেরত আনা হল ৭ জনকে; গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারির চক্রের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আস্তানায় বন্ধিশালা থেকে নানা প্রক্রিয়ায় ৭জনকে ফেরত এনে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সংঘবদ্ধ পাচারকারি চক্রের নারী সহ ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার দুপুর আড়াই টার দিকে কক্সবাজার সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন, কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

গ্রেপ্তার পাচারকারি চক্রের সদস্যরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুর বিল এলাকার মৃত ওমর হামজার ছেলে মো. বেলাল উদ্দিন (২৮), সাবরাং ইউনিয়নের লাফার ঘোনার এলাকার আবদুল গফুরের মাহফুজা (২২), একই ইউনিয়নের গোলারপাড়া এলাকার মৃত আবদুল গণির ছেলে আব্দুল্লাহ (৫৫) ও মিয়ানমারের বুচিডং এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আয়াছ (২৬)।

পাচারকারি চক্রের আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়ারা হলেন, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের স্টেশন পাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে রায়হান উদ্দিন (২৮), সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুরের মো. হোসেন আলীর ছেলে মো. হাবিব উল্লাহ (১৬), কক্সবাজার পৌরসভার বৈদ্যঘোনা এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে মো. রায়হান কবির (১৬), একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে মো. আলমগীর (১৮), মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের সোনা মিয়ার ছেলে সফর আলী (১৭), একই এলাকার আলী আজগরের ছেলে শওকত আজিজ (১৮) ও উখিয়ার থাইংখালী এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে মো. মামুন মিয়া (২১)।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় লিপিবদ্ধ হওয়া ২ টি সাধারণ ডাইরীর তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারি চক্র কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী, উখিয়ার কিছু কিশোর ও যুবককে নানা প্রলোভ দেখিয়ে উন্নত জীবনের কথা বলে মালেয়শিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি করে। তাদের প্রথমে টেকনাফের লেঙ্গুর বিল এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর সাগর পথে মিয়ানমারের একটি আস্তানায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে। ওখানে জিন্মি করার পর নির্যাতন চালিয়ে ফোনে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপনের টাকা দাবি করে।

তিনি জানান, স্বজনরা নির্যাতনের খবর পেয়ে নানাভাবে পাচারকারীদের বিভিন্ন অংকের টাকাও প্রদান করে। এই টাকা গ্রহণকারি লোকজন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ পাচারকারি চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তারদের কৌশলে ব্যবহার করে রবিবার রাতে মিয়ানমার থেকে টেকনাফের সমুদ্র সৈকত এলাকায় ফেরত আনা হয় ৭ জনকে।

মিজানুর রহমান জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি ও গ্রেপ্তারের কাছ থেকে আর নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এসব তদন্ত করে পাচারকারি চক্রের অন্যান্য সদস্যদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও নিখোঁজ অন্যদের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানা ছাড়াও পৃথকভাবে উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও চকরিয়া থানায় মামলা হয়েছে।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ সৈকতে গোসলে নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে মাদ্রাসা পড়ুয়া এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে;…

5 hours ago

বুদ্ধাঙ্ক (IQ) এর পরিমাপ অনুযায়ী প্রতিভাবান শিশুদের বুদ্ধাঙ্ক মাত্রা

জাহাঙ্গীর আলম ছিদ্দিকী : লেখক, কলামিস্ট ও শিক্ষক, দক্ষিণ খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।শিক্ষার্থীর নাম :…

6 hours ago

চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:  চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রবিবার…

7 hours ago

জীবন সংগ্রামি লাইলার কম মূল্যের সবজির দোকান

শহীদ উল্লাহ : লাইলা বেগম, যেন এক সংগ্রামি নারীর নাম। স্বামী কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন…

10 hours ago

শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল

এম জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া : চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের ঘুষ গ্রহণের…

10 hours ago

মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশেপাশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান…

1 day ago