আইন-আদালত

ট্রলারে ১০ মরদেহ : গ্রেপ্তার দস্যূ সর্দার সুমন ৩ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হওয়া দস্যূ সর্দার খাইরুল বশর সুমনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টার দিকে কক্সবাজার সদর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গাঁ ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত থেকে সুমনকে রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

খাইরুল বশর সুমন মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপের মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে। সমুন প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পনকারি জলদস্যূদের একজন।

এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস।

তিনি জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের পর সুমনকে কক্সবাজারে আনা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল ১০ মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে সুমন আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর তার পরিচয় গোপন করতে মুখে দাঁড়ি রেখে ছন্মবেশ ধারণ করে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধিন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন একটি ট্রলার নাজিরারটেক উপক‚লে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদি হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যার মধ্যে এর মধ্যে ৬ জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করেন। এরা হলেন, মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।

তবে গ্রেপ্তারের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন জবানবন্দি প্রদান করেননি।

ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছিলেন, এ ঘটনার পর থেকে তদন্ত দস্যূ সর্দার সুমনের নাম নানাভাবে আসতে থাকে। এরপর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য নানাভাবে অভিযান শুরু করে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন অস্ত্র-সরঞ্জাম ও অর্থযোগান দিয়ে ৭ এপ্রিল ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপকে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিল ঘটনায় নিহত ট্রলার মালিক শামসুল আলম মাঝি। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বলেছে ‘আমি তাদের ডাকাতি করতে পাঠিয়ে ছিলাম, মরার জন্য না।’

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

14 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

19 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

19 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

2 days ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

2 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

2 days ago