নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারে ৭ দিনের ব্যবধানে আরও ৭৬০ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬০৫ জন রোহিঙ্গা এবং ১৫৫ জন স্থানীয় রয়েছেন।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দেয়া এক তথ্য বিবরণীতে এমন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য বিবরণী মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত কক্সবাজারে মোট ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ৩ হাজার ৬০১ জন। যার মধ্যে ৩ হাজার ১৯০ জন রোহিঙ্গা ও ৪১১ জন স্থানীয় রয়েছেন। কিন্তু গত ৭ দিন আগে ১৭ জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ২ হাজার ৮৪১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিলেন। যেখানে রোহিঙ্গা ছিলেন ২ হাজার ৫৮৫ জন ও স্থানীয় ছিলেন ২৫৬ জন।

তথ্য বিবরণীতে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত বিবেচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও তার আশে-পাশের এলাকা ক্রমাগত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৬২ জন। যেখানে রোহিঙ্গা ৩ হাজার ১০৮ জন এবং স্থানীয় ২৫৪ জন। গত ১৭ জুলাই এর তথ্য বিবরণীতে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৭৬ জন। যেখানে রোহিঙ্গা ২ হাজার ৫২১ জন ও ১৫৫ জন স্থানীয় বাংলাদেশী। এ পরিসংখ্যা মতে, গত ৭ দিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক নতুন করে ৬৮৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। যেখানে ৫৮৭ জন রোহিঙ্গা এবং ৯৯ জন স্থানীয় বাংলাদেশী আক্রান্ত হয়েছেন।

এর বাইরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সোমবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৯ জন। যেখানে ১৫৭ জন স্থানীয় বাংলাদেশী এবং ৮২ জন রোহিঙ্গা। গত ১৭ জুলাই এর প্রতিবেদনে মোট আক্রান্ত ছিল ১৬৫ জন। যেখানে ১০১ জন স্থানীয় বাংলাদেশী এবং ৬৪ জন রোহিঙ্গা ছিল। সদর হাসপাতালে গত ৭ দিনে নতুন করে ৫৬ জন স্থানীয় বাংলাদেশী ও ১৮ জন রোহিঙ্গা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা জানিয়েছেন, আক্রান্তের বিবেচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৬ টি এলাকা ডেঙ্গুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩ নম্বর ক্যাম্পে ৮৬২ জন, ১৭ নম্বর ক্যাম্পে ২২২ জন, ৪ নম্বর ক্যাম্পে ২১৪ জন, ৯ নম্বর ক্যাম্পে ১৬৯ জন, ১ নম্বর ডাবিøউ ক্যাম্পে ১৪৩ জন এবং ১৮ নম্বর ক্যাম্পে ১৩০ জন ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। এছাড়া ঝুঁকি বিবেচনায় চকরিয়ায় ৪৯ জন, কক্সবাজার পৌরসভায় ৪৮ জন, উখিয়ায় ৪০ জন, টেকনাফে ৩৭ জন, কক্সবাজার সদরে ২৭ জন এবং মহেশখালীতে ২৪ জন রোগী পাওয়া গেছে।

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ জুন একজনের মৃত্যু সহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ৭ মাসে। এরা সকলেই রোহিঙ্গা। আক্রান্ত বিবেচনায় ৬৭ শতাংশ পুরুষ ও ৩৩ শতাংশ নারী। এতে ০-৫ বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ, ৬-১৮ বছরের মধ্যে ১৭ শতাংশ, ১৯-৪০ বছরের মধ্যে ৬০ শতাংশ, ৪১-৬০ বছরের মধ্যে ১৬ শতাংশ ও ৬০ বছরের উর্ধ্বে ২ শতাংশ মানুষ রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কক্সবাজারে মোট ১৯ হাজার ২৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। যার মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩৬ জন রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার ৫৮৫ জন স্থানীয়। এই এক বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যার মধ্যে রোহিঙ্গা ২৬ জন ও স্থানীয় ১৩ জন।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…

1 day ago

চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…

1 day ago

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…

1 day ago

সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…

2 days ago

পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…

2 days ago

সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…

2 days ago