কক্সবাজার জেলা

‘জলে-জলে পরিশুদ্ধির আহবান নিয়ে মগীসনের বিদায় ও বরণ’

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ষপঞ্জিকা মতে, ১৬ এপ্রিল (রবিবার) রাতে শেষ হয়েছে ১৩৮৪ মগীসন। ১৭ এপ্রিল (সোমবার) শুরু হল রাখাইন নতুন বর্ষ ১৩৮৫ মগীসন। আর এই মগীসনকে বিদায় ও বরণকে সামনে রেখে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ৩ দিনের সাংগ্রাইং পোয়ে বা ঐতিহ্যবাহি জলকেলি উৎসব শুরু হয়েছে।

সোমবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্ন প্যান্ডেলে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। অনুষ্ঠানে রাখাইন ব্যান্ড দলের পরিবেশনায় গান ছাড়াও ঐতিহ্যবাহি নৃত্য পরিবেশন হয়েছে।

রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ বলছেন, পুরাতন বছরের সকল গøানি, দুঃখ জলে মুছে নতুনভাবে জলে জলে পরিশুদ্ধির জন্য এই উৎসব। টানা ৩ দিন চলবে এই উৎসব।

কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে দেখা গেছে, ঢোল-বাজনা, গানে তরুণ-তরুনী সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ শোভযাত্রা সহকারে যাচ্ছে প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে। যেখানে আগে থেকে বসে আছে সারিবদ্ধ তরুণী। শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া তরুণরা প্যান্ডেলের সামনে গিয়ে কোন একজনকে আগে পানি নিক্ষেপ করে আমন্ত্রন জানান। ওই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তরুণী তরুণকে লক্ষ্য করে পানি নিক্ষেপ করেন। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে চলে পানি নিক্ষেপের খেলা।

রাখাইন তরুণ লা চিং অ্যাং জানান, নতুন বর্ষকে বিদায় ও বরণের এই ঐতিহ্যবাহি সামাজিক উৎসব। এ উৎসব ঘীরে ৩ দিন ব্যাপী জলকেলি ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে রান্না হচ্ছে নিজস্ব খাবার।

এটাকে প্রাণের উচ্ছ¡াসে মাতিয়ে তোলার উৎসব মন্তব্য করে প্রিয়াংকা রাখাইন জানান, একে অপরের সাথে জল নিক্ষেপ ছাড়াও নিজের মধ্যে সামাজিক বন্ধন ও ঐক্য তৈরিতে এ উৎসব ভ‚মিকা রাখে।

এ উৎসবের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানকারি কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মংছেন লা জানান, এবার কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে ১৫ টি প্যান্ডেল তৈরি হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার মধ্যে ৩ দিন উৎসব চলবে। এখানে কেবল রাখাইন নয়, অন্যান্য ধর্মের মানুষও আসছেন। যেটার কারণে সম্প্রীতির একটি বন্ধনও তৈরি হয়। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, ঈদগাঁও, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, পেকুয়ার উখিয়ার রাখাইন পল্লী ঘীরে শতাধিক প্যান্ডেলে ৩ দিনব্যাপী এ উৎসব চললে।

রাখাইনদের ৩ দিনের জলকেলি উৎসব সার্বিক সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সকল প্রকার কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। তিনি জানান, জলকেলি উৎসবটি রাখাইনদের হলেও এটি কালক্রমে এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহি সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এর জন্য পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে রয়েছেন। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরধারীও বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসবের শেষ করা সম্ভব হবে।

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

15 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

20 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

20 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

2 days ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

2 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

2 days ago