এক্সক্লুসিভ

কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন : মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পত্র জামা নিলেন ৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার পৌরসভার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন ৭ জন। রাজধানী ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মনোনয়ন ফরম জমা দেয়া হয়েছে।

আওয়ামীলীগের কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মতে প্রার্থী চ‚ড়ান্ত করতে আগ্রহীদের ৯ থেকে ১২ এপ্রিল মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করে জমা দেয়ার নিদের্শনা দেয়া হয়েছিল। এ সিদ্ধান্ত মতে বুধবার সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এরা হলেন, বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য রাশেদুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক নেতা আবদুল খালেক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রিয় যুবলীগের সদস্য ইশতিয়াক আহমদ জয়।

বর্তমান মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন ফরম জমা দেন তিনি। এসময় কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আজিম কনক সহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর কাজ করার সুযোগ পেয়েছেঠন মাত্র ২ বছর। বাকি সময় গুলো চলে গেছে করোনা কালিন মানবিক সেবায়। এর মধ্যে পর্যটক শহরের উন্নয়নের চেহারা বদলে গেছে। বদলে গেছে শহরের সড়ক-উপ সড়ক সহ সার্বিক দৃশ্য। উন্নয়ন কাজ এখনও চলমান। পৌরবাসি চান তিনি আবারও নির্বাচন করুক, দলীয় নেতা-কর্মীদের চাপও রয়েছে। ফলে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আবারও মনোনয়ন চাইতে হচ্ছে। তিনি আশা করেন দল তাকে আবারও প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবেন।

মনোনয়ন পত্র জমা দেয়া সত্যতা নিশ্চিত করে পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান জানান, একাধিক বারের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র তিনি। দায়িত্ব পালন করেছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবেও। পৌরসভার উন্নয়নে তার ভ‚মিকা রয়েছে। গতবারেও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবারও জমা দিয়েছেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই অবস্থান সব সময় ছিল এবং থাকবে বলে জানান তিনি।

জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ জানান, তার পিতা মরহুম একেএম মোজাম্মেল হক জাতির জনকের অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন। আজীবন আওয়ামীলীগের হয়ে লড়াই-সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা পরিবারের একজন তিনি। তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করুক এটা নেতা-কর্মীদের দাবিও প্রত্যাশা। মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনে নেবেন বলে জানান তিনি।

জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য রাশেদুল ইসলাম জানান, কক্সবাজারের সার্বিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। এর আগেও একাধিকবার নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। এবারও তিনি অবশ্যই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

তিনি মনে করেন, একটি বলয় বা সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে মেয়র পদে তাকে দল মনোনয়ন দেবেন। দলের সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাউকে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক নেতা আবদুল খালেক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রিয় যুবলীগের সদস্য ইশতিয়াক আহমদ জয় দলীয় মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমান। নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে রফিকুল ইসলাম, জামায়াত সমর্থিত নাগরিক কমিটির সরওয়ার কামাল ও জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন শিকদার মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন।

গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন আগামি ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন। ঘোষণা মতে, কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে।

কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, কক্সবাজার পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮০২ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৯ হাজার ৮৭৯ জন ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯২৩ জন। তবে এ ভোটার সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।

এদিকে, কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে আপাততে কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিএনপি। বিএনপি’র এই নীরবতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত নেতা ও সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল মাঠে তৎপর রয়েছেন।

বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার-রামু আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল জানিয়েছেন, কেন্দ্রিয়ভাবে বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কোন আগ্রহ নেই। এক্ষেত্রে কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন নিয়ে দলীয়ভাবে কোন ভাবনা তাদের মধ্যে নেই। ইতিমধ্যে দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দেশে কয়েকটি স্থানে বিএনপি নেতাদের বহিষ্কারও করা হয়েছে। এখানে মেয়র প্রার্থী নিয়ে আলোচনার কোন সুযোগ বিএনপির মধ্যে হচ্ছে না। কেন্দ্রিয়ভাবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হলে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

জামায়াত নেতা ও সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, ‘কক্সবাজার পৌরবাসির ইচ্ছে মেয়র পদে নির্বাচন করি। আমি দায়িত্ব পালনকালে পৌরবাসি সেবা দিয়েছি, তারা আবারও মেয়র হিসেবে দেখতে চান। প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছি। আমি কোন সময় দলগত প্রার্থী হয়নি। প্রতিবারই নাগরিক কমিটির পক্ষে প্রার্থী হয়েছি। সকলের সমর্থনে এবারও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

18 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

23 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

23 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

2 days ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

2 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

2 days ago