এক্সক্লুসিভ

ছয় বছরে মানসিক ভারসাম্যহীন ৩৯ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ : মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ; যা পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। স্বাভাবিক নিয়মে এদের পাগল বলে সকলেই এড়িয়ে গেলেও এদের পাশে দাঁড়িয়ে গত ৬ বছর ধরে কক্সবাজার কক্সবাজারের টেকনাফের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মানসিক রোগীদের তহবিল বা মারোত নামের এ সংগঠনের প্রচেষ্টায় গত ৬ বছরে পরিবারের স্বজনদের কাছে ফিরতে পেরেছেন ৩৯ জন নর-নারী।

সর্বশেষ গত শনিবার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ইয়াসিন আকতার (৩৭) নামের একজন। মানসিক ভারসাম্যহীন ইয়াসমিন চট্টগ্রামে হাটহাজারী উপজেলার দেওয়ান নগর গ্রামের মৃত শমসু মিয়ার মেয়ে। শনিবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া বাজার এলাকায় থেকে তাকে বড় বোন সাজু আকতার ও ছোট ভাই মোহাম্মদ রাশেদের হাতে হস্তান্তর করে সংগঠনটি।

মারোত কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, সাত বছর আগে ইয়াসিনের বাবা মারা যান। ছয় বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে ইয়াসমিন আট নম্বর।

মারোত কেন্দ্রী কমিটির সহ-সভাপতি ঝুন্টু বড়–য়া বলেন, নয়াপাড়া বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ইয়াসমিনের সাথে সংগঠনের সদস্য কথা বলার চেষ্টা চালায়। কথা বলার একপর্যায়ে সেই কিছুটা নাম-ঠিকানা বলতে সক্ষম হয়। তখন হাটহাজারী থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। যোগাযোগের সুবাধে ভাইবার, ভিডিও কল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছবি আদান-প্রদানের এক পর্যায়ে আর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

বোনকে নিতে এসে ভাই মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, তার বোন বিগত ৫ বছর আগে বাড়ী থেকে বের হয়ে আর ফিরেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়। তার কোন ধরনের খোঁজ খবর না পেয়ে তাদের পরিবারে মাঝে এক ধরনের হতাশা নেমে আসে। ধরে নিয়েছিলাম হয়তো সেই আর পৃথিবীতে বেঁচে নেই। কখনো আর তার দেখা আমরা পাব না। এরই মধ্যে মারোতে সদস্যদের মাধ্যমে বোনের খবর পেয়ে আমরা তাকে ফিরিয়ে নিতে এসেছি।

মারোতের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল জানান, টেকনাফের বিভিন্ন পেশার নিয়োজিত লোকজনকে নিয়ে ২০১৭ সালে মারোত যাত্রা শুরু করে এই সংগঠনের উদ্যোগে এ পর্যন্ত ৩৯ জন ভাসমান মানসিক রোগীকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। মারোত কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে টেকনাফ উপজেলার শতাধিক মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের দৈনিক একবেলা করে রান্না করা খাবার দিতেন। এবং বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শীতবস্ত্রের পাশাপাশি উন্নতমানের জামা-কাপড়, খাবার ও অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি কোনো মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী মারা গেলে তাদের দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আসছিল ।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফে বস্তাবন্দি শিশু হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে শিশুকে বস্তাবন্দি হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহ দুই আসামিকে…

51 mins ago

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কক্সবাজারে শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও অনুদান প্রদান করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী গণআন্দোলনে কক্সবাজারে শহীদদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এবং শহীদদের কবর জিয়ারত…

2 hours ago

কুতুবদিয়ায় বিশ্ব নদী দিবস পালিত

ফয়সাল উদ্দিন রিপন, কুতুবদিয়া : "নদী দূষণ বন্ধ কর, প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ কর"এ স্লোগানকে সামনে…

2 hours ago

টেকনাফে নিখোঁজ মেয়ে শিশুর বস্তিাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে খেলাধুলা করতে গিয়ে নিখোঁজের নয় ঘন্টা পর এক মেয়ে শিশুর বস্তাবন্দি…

2 hours ago

৩৫ হাজার ইয়াবা সহ পুলিশ কনস্টেবল সহ আটক ২

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারে ৩৫ হাজার ইয়াবাসহ পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা।…

2 hours ago

সেনা কর্মকর্তারা ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাপ্রাপ্ত : মব জাষ্টিস নিন্দনীয়

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট বিগত ১৮ সেপ্টেম্বরের দেশের প্রায় সকল পত্রিকায় প্রধান সংবাদ-শিরোনাম ছিল ফৌজদারী কার্যবিধির,…

3 hours ago