মিয়ানমার পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা বুঝতে চায় ঢাকা

জাতীয় ডেস্ক : রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমার মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। ওই শুনানির প্রথমদিনে অপ্রাসঙ্গিকভাবে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়টি উত্থাপন করেন মিয়ানমারের আইনজীবীরা। বিষয়টি মনোযোগের সঙ্গে খেয়াল করছে বাংলাদেশও।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখন আইসিজের শুনানিকে বিবেচনায় নিয়ে মিয়ানমার ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না সেটা দেখার বিষয় আছে। সেইসঙ্গে এসব পদক্ষেপ সত্যিকার অর্থেই তারা বাস্তবায়ন করতে চায়, নাকি তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে; সেটাও দেখতে হবে।

শুনানিতে মিয়ানমার দাবি করেছে, তারা রাখাইনে অবস্থিত আইডিপি (ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পারসনস) ক্যাম্প সরানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এটি মিয়ানমারের নিজস্ব ব্যাপার।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিয়ানমার স্বীকৃতি চাইছে। সেটা করতে গেলে তারা যদি দেখে যে—মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটিকে হয়তো অনেকে ভালোভাবে নেবে। স্বীকৃতির জন্য তারা কতটা কাজ করবে তা বলতে পারবো না, তবে অন্তত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের ওপর বিরক্ত। মিয়ানমার যদি তাদের ফেরত নিতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়, তবে কিছুটা হলেও পাপমোচন হতে পারে।

পাইলট প্রকল্প

সবাই চায় প্রত্যবাসন শুরু হোক এবং এটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে হবে উল্লেখ্য করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রথম অবস্থায় ৮শ’ থেকে ১ হাজার লোক দিয়ে শুরু হবে। কিন্তু এটি যদি শুধু একবারই হয়, তবে এর একটি বড় ঝুঁকি হবে।

রাখাইনে যারা ফেরত গিয়েছিল তাদের অনেকের জেল-জরিমানার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কিছু হবে না—এটি নিশ্চিত করেই তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। অন্যথায় অন্যরা যেতে চাইবে না। ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং জীবিকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেই পাঠানো হবে। এদের গায়ের জোরে পাঠানোর সুযোগ নেই এবং ঠিকও হবে না।

ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি আছে সেটি বাস্তবায়নের জন্য চীন সহায়তা করছে। তবে গত বছরের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রিপক্ষীয় কোনও বৈঠক হয়নি।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সরাসরি তিন পক্ষ একসঙ্গে অনেকদিন বসেনি। কিন্তু চীন তাদের সঙ্গে কথা বলছে, আবার আমাদের সঙ্গেও কথা বলছে। এটিকে যদি মিয়ানমার ঘুরিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক বলতে চায়, তবে বলতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার গণহত্যার অভিযান শুরু করলে ৭ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। এর আগে থেকেই তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। এদের কাউকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি মিয়ানমার সরকার।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…

23 hours ago

চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…

1 day ago

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…

1 day ago

সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…

2 days ago

পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…

2 days ago

সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…

2 days ago