দুই মিনিটেই মুহিবুল্লাহ হত্যা, ছিলো ১৯ ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মুহিব্বুল্লাহ হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির নিদের্শে। যিনি মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এই হত্যার নিদের্শ দিয়ে ছিলেন। আর হত্যার মিশন বাস্তবায়নে ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় গোপন বৈঠক। ১৯ জনের একটি দল এ হত্যাটি সংগঠিত করে মাত্র ২ মিনিট সময়ে।

হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ নেয়া আজিজুল হক সহ ৪ জনকে আটকের পর এমন তথ্য জানিয়েছেন ১৪ এপিবিএন এর অধিনায়ক এসপি মো. নাঈমুল হক।

আটকদের শনিবার বিকালে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেরিন সুলতানার আদালতে আনা হলেও ওখানে আজিজুল হক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

শনিবার দুপুরে উখিয়ায় মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেফতারের পর প্রেস ব্রিফিং করেন ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক।

আজিজুল হক ছাড়া কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর ডি ৮ ব্লকের আব্দুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ প্রকাশ মুরশিদ আমিন ও একই ক্যাম্পের বি ব্লকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাছ ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকে আটক করা হয়।

এসপি নাঈমুল হক বলেন, মুহিবুল্লার হত্যার দুইদিন আগে মরকজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য বৈঠক করে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে ৫ জনকে অস্ত্রসহ মোট ১৯ জন কে নির্দেশ দেয়া হয় মিশন শেষ করার জন্য।

তিনি আরও জানান, প্রথমে একটি, তার পরের জন দুইটিসহ চারটি গুলি করা হয় মুহিবুল্লাহকে। তারপর মুহিবুল্লার বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যায় স্কোয়াডের ৫ জন। পরে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। বিভিন্ন জনের উপর দোষ চাপাতে থাকে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প-১ ইস্ট-ওয়েস্ট (ডি ব্লকে) নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন মুহিবুল্লাহ। এসময় বন্দুকধারীরা গুলি করে হত্যা করে তাকে। এখন পর্যন্ত এ হত্যা মামলায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তার মধ্যে মোহাম্মদ ইলিয়াছ নামে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা এস আই কার্তিক চন্দ্র জানান, গ্রেফতার আসামি আজিজুল হক মুহিব্বুল্লাহ হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছে বলে আদালতে স্বীকার করেন এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দিতে সে জানিয়েছেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া ১ ইস্ট নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিব্বুল্লাহর নিজ অফিসে তার সহকর্মীদের সাথে আলাপচারিতা কালে তাকে হত্যার মিশনে যে ৫ জন রোহিঙ্গা অংশ নিয়েছিল তাদের মধ্যে আজিজুল হক নিজেই অংশ নেয় এবং তাদের তিন জনের কাছে অস্ত্র ছিল। ৫ জনের মধ্যে তারা তিন জন মুহিব্বুল্লাহর অফিসে ঢুকে মুহিব্বুল্লাহকে গুলি করে। অপর দুই জন মুহিব্বুল্লাহর অফিসের বাইরে পাহারায় ছিল। মাত্র দুই মিনিটে হত্যা মিশন শেষ করে।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…

2 days ago

চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…

2 days ago

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…

2 days ago

সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…

3 days ago

পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…

3 days ago

সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…

3 days ago