‘প্রদীপ জিম্মি করে ২ কন্যাকে ধর্ষণের বর্ণণা দিলেন বেবি বেগম’

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে আসামির আইনজীবীর জেরার সময় আদালতে কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন মামলার সাক্ষি হোয়াইক্যং এর বেবী বেগম। এ সময় আদালতে তাকে পানি পান করে স্বাভাবিক হওয়ার কথা বললে বেবি ওসি প্রদীপের মতো মানুষের সামনে পানি পান করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

আদালতে এই সাক্ষি টেকনাফ থানায় কর্মরত থাকাকালিন ওসি প্রদীপ জিম্মি করে বেবি বেগমের ২ কন্যাকে ধর্ষণের বর্ণণা দেন। বেবি বেগম আদালতকে জানান, ওসি প্রদীপ তার স্বামী, তাকে এবং তার ২ কন্যাকে আসামি করে ইয়াবার মিথ্যা মামলা করেন। একই সঙ্গে ২ কন্যাকে ধর্ষণ করেন। এখন তার কন্যার বিয়েও হচ্ছে না।

দুপুরে আদালত এক ঘন্টার জন্য বিরতি দিলে আইনজীবীরা আদালত থেকে বের হন। এসময় এক আইনজীবী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

রোববার সকাল সোয়া ১০ টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ বিচারকাজ শুরু হয়। শুরুতে বেবি বেগমকে আইনজীবীরা জেরা করেন। জেরা শেষে আদালতে ২১-তম সাক্ষি সেনা কর্মকর্তা লে. আরফিন তার সাক্ষ্য প্রদান করেন। এরপর শুরু হয় জেরা।

এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনে চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৃতীয় দফায় তিন দিনে পর্যন্ত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলায় চতুর্থ দফায় দুই দিনে ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে একুশতম সাক্ষিসহ মামলায় আরো ৬৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
রোববার সকাল সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজেন ভ্যান করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্ত ভার দেয়া হয় র‌্যাবকে।

গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারি পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষি করা হয় ৮৩ জনকে।

nupa alam

Recent Posts

নারীর জমি দখলে নিতে কৃষকদল নেতা পরিচয়ে ভোর রাতে হামলা, ভাংচুর ও গুলি বর্ষণ; আটক ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা এলাকায় এক নারীর স্বত্ব দখলীয় জমি দখলে নিতে ভোর…

9 hours ago

হজ্ব যাত্রীদের হয়রানী করলে এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

রামু প্রতিবেদক: রামুতে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম…

9 hours ago

চকরিয়া কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, শিক্ষকদের কর্মবিরতি

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে টানা দুই ঘন্টা চট্টগ্রাম -কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ…

11 hours ago

মিয়ানমার অভ্যন্তরে ‘তোঁতার দিয়া’ সীমান্তেমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি জেলের পা বিচ্ছিন্ন

টেকনাফ প্রতিবেদক : টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তোতার দিয়া নামক এলাকায় মাছ শিকারে…

11 hours ago

উখিয়ায় ‘জমি বিরোধের জেরে’ সংঘর্ষে জামায়াত নেতা সহ নিহত ৩, আটক ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ায় ‘জমি বিরোধের জেরে’ দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে জামায়াত ইসলামীর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি…

12 hours ago

টেকনাফে আবারও দুইজনকে অপহরণ; ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

টেকনাফ প্রতিবেদক : টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবনিয়া এলাকার থেকে দুইজনকে অপহরণ করেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।…

12 hours ago