করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে গেছে : ডব্লিউএইচও প্রধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনার অতি সংক্রামক পরিবর্তিত ধরন ডেল্টার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস।

বৃহস্পতিবার সুইজার‌ল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, বিশ্বজুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে এবং আমরা বর্তমানে এর প্রাথমিক পর্যায়ে আছি।’

তিনি বলেন, ‘টানা ৪ সপ্তাহ ধরে বিশ্বে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই ভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টা ইতেমধ্যে ১১১টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’

কাজের সুবিধার জন্য বিশ্বের দেশসমূহকে ৬টি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করেছে ডব্লিউএইচও। আগের দিন বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছিলেন, ডব্লিউএইচওর ১টি প্রশাসনিক অঞ্চল ব্যতীত বাকি ৫ অঞ্চলেই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

বুধবার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক বুলেটিনে বলা হয়, কেবল গত সপ্তাহেই বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এবং একই সময়ে এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ হাজারের কোটা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাজ্যে।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বজুড়ে টিকা বণ্টনে অসমতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন গেব্রিয়েসুস। বলেছিলেন, ‘টিকা বণ্টনে অসমতা এই মহামারির দুটি চিত্র আমাদের সামনে হাজির করেছে। একটি চিত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নত দেশসমূহ তাদের উল্লেখযোগ্য জনগণকে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে এবং যাবতীয় বিধিনিষেধ শিথিল করছে। আরেক চিত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বের অনেক দেশ, যাদের কাছে প্রয়োজনীয় পরিমাণে টিকার ডোজ নেই, সেসব দেশের জনগণের জীবন এই ভাইরাসের দয়ার ওপর নির্ভর করছে।’

তবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক জানিয়েছেন, শুধু টিকার মাধ্যমে এই তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলা করা যাবে না।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, ডেল্টা ধরন টিকার ডোজকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। এ কারণে শুধু টিকার ওপর নির্ভর করে থাকলে এই তৃতীয় ঢেউকে ঠেকানো সম্ভব হবে না।’

‘এজন্য প্রয়োজন যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং তার ধরাবাহিকতা বজায় রাখা। নিকট অতীতেই আমরা দেখেছি, বিশ্বের কয়েকটি দেশ এসব পদ্ধতি অনুসরণ করে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।’

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান…

2 days ago

চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ

চকরিয়া প্রতিবেদক: চকরিয়ায় জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ…

2 days ago

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্টামর্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার…

2 days ago

সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার…

3 days ago

পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ‘বেড়াতে গিয়ে অপহরণের শিকার’ যুবকের তথ্যে অভিযান চালিয়ে পাহাড়ী এলাকার গোপন…

3 days ago

সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ব্যক্তিগত সহকারি ( পিএস…

3 days ago