কক্সবাজার জেলা

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমের বিরুদ্ধে এইবার সরকারী ত্রান বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে দুদকে লিখিত অভিযোগ করেছে খোদ ঐ পরিষদের ৫ জন সদস্য।

বুধবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ৫ ইউপি সদস্য এই অভিযোগ করেন। একই সাথে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বাসবভন ও তার বাসার সামনের ডায়বেটিকস হাসপাতালে অভিযান চালালে অনেক সরকারী ও এনজিওর ত্রান উদ্ধার হবে জানিয়েছে ইউপি সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলন হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যন ইউপি সদস্য জয়নাব বেগম লিপি, শাহাজাহান চৌধুরী, মোঃ মোক্তার, রফিক আহম্মদ ও ফজল করিম উপস্থিত ছিলেন।

এই সময় ইউপি সদস্যগন অভিযোগ করেন ২০১৬ সালের ৪ জুনের নির্বাচনে নির্বাচনে তিনি কিভাবে নির্বাচনকে কলংকিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তা সারাদেশের মানুষ জানেন। ইতিহাস কলংকিত করে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান শাহ আলম হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের দূর্নীতিরও ইতিহাস রচনা করেছেন।

ইউপি সদস্যরা আরো অভিযোগ করেন হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়ষ্কভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাত, সরকারী প্রজেক্ট, ঠিকাদারি ও এনজিওর বিভিন্ন বরাদ্দ নিয়ে চেয়ারম্যান দূনিতী ও অনিয়ম করে আসতেছে ।

তারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা আসার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী হোস্ট কমিউনিটির জন্য যে বরাদ্দ দেয়া হয় ও এনজিওরা যেসব সহযোগিতা করে হয়েছে তা চেয়ারম্যান শাহ আলম নিজস্ব ব্যাক্তিগত সহযোগিতার নামে বিতরন করে সরকারের সাথে প্রতারনা করছে। জনগনকে বিভ্রান্ত করছে। দূর্নীতি করার জন্য চেয়ারম্যান এইসব এনজিওর সহযোগিতার সাথে আমরা ইউপি সদস্যগনকে সম্পৃক্ত করা হয়না। এনজিওর বিভিন্ন ত্রান ও সহযোগিতা পরিষদে না এনে চেয়ারম্যান নিজ বাসায় নিয়ে বিতরন করছে বলে দাবি করে। এইসব ত্রান কোথায় যায় বা কাকে দেয়াহয় তার কোন হিসাব আমরা পরিষদের কেউ জানিনা। তিনি এসব ত্রান শুধু মাত্র ব্যাক্তিগত লোক ও আত্মীয়স্বজনের মাঝে বিতরন করে আসছেন ।

ইউপি সদস্যগন অভিযোগ করেন, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলম অধিকাংশ ওয়ার্ডের ভি.জি.ডি, ভি.জি.এফ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও পঙ্গু ভাতা বিতরনে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি করে আসছে। চেয়ারম্যান শাহ আলম টাকার বিনিময় ও নিজের স্বজনকে তারা ভিজিএফ কার্ড দিচ্ছে। এত ওয়ার্ড পর্যায়ের সাধারণ মানুষ সরকারের ভিজিডি ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চেয়ারম্যান শাহ আলম বা তার মনোনীত ব্যক্তি দিয়ে হলদিয়া পালং ইউনিয়নে ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও পঙ্গু ভাতা বিতরণে বিভিন্ন মানুষ থেকে টাকা আদায় করছে।চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মনোনীত ব্যক্তিদের টাকা না দিলে কোন ব্যক্তি সরকারি সহযোগিতা পাচ্ছেনা। এতে করে প্রকৃত বয়স্ক, বিধবা, পঙ্গু ও গরীব অসহায় মানুষরা বঞ্চিত হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে আরো অভিযেগ করা হয় শাহ আলম হলদিয়া পালং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এই ইউনিয়নে যতো ধরনের সরকারি প্রজেক্ট বা বরাদ্দ এসেছে তার প্রত্যেকটিতে দূর্নীতি অনিয়ম করে চেয়ারম্যান টাকা আত্মসাৎ করেছে। হলদিয়া পালং ইউনিয়নের এখন অঘোষিত চেয়ারম্যান হলো শাহ আলমের শ্যালক বিএনপি নেতা মনির আহম্মদ। মনির আহম্মদই এখন হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের রাজা । এই পরিষদের সকল কাজ /টেন্ডার / প্রজেক্টে চেয়ারম্যান শাহ আলমের শ্যালক মনির আহমেদ নিজে নামে বেনামে করে সরকরী টাকা আত্মসাৎ করে। মনির আহমেদের নেতৃত্বে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাধরন জনগন থেকে শুরু করে আমরা ইউপি সদস্যদেরও হুমকি ধমকি দিয়ে জিম্মি করে আসছে। চেয়ারম্যান শাহ আলম সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব জনাব শফিউল আলমের ছোট ভাই হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি ও এনজিও কর্মকর্তাদের হুমক-ধমকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে আসছেন। চেয়ারম্যান তার ভাই সাবেক মন্ত্রী পরিষদের সচিব শফিউল আলমের নাম ব্যবহার করে আমরা ইউপি সদস্যদেরও বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করছে। আমাদের বিভিন্ন মামলায় ফাসানোর হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।

সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জয়নাব বেগম লিপি ও ফজল করিম অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান শাহ আলম ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ কাজে আমদের সীল-স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দুর্নীতি ও অনিয়ম করে আসছে। বিগত পাঁচ (৫) বছরে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের প্রত্যেকটি প্রকল্পে সুষ্ঠু তদন্ত করলে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে। চেয়ারম্যান শাহ আলম, তার শ্যালক মনির আহম্মদ ও তাদের পরিবারের চেয়ারম্যান নির্বাচনের আগের ও বর্তমান সম্পদের তথ্য তদন্ত করলে দুর্নীতি প্রমাণ পাওয়া যাবে। এই জন্য আমরা দূর্নীতি দমন কমিশন, স্থানিয় সরকার মন্ত্রনালয়, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ ১২টি সরকারী দপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি।

ইউপি সদস্যগন হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি ত্রাণ পৌঁছাতে ও বর্তমানে চলমান ভিজিডি কার্ড বিতরনে দূর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে করতো আপনার সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। পাশাপাশি চেয়ারম্যান শাহ আলমের দুর্নীতির তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন করেন।

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

7 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

11 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

12 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

1 day ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

1 day ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

1 day ago