আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আপত্তি দাখিল করেছে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) চলমান মামলায় আপত্তি দাখিল করেছে মিয়ানমার। গত মাসে এই আপত্তি দাখিল করা হলেও সম্প্রতি সেই তথ্য সামনে এসেছে। গত ২৮ জানুয়ারি আইসিজে প্রেসিডেন্ট আবদুলকায়ি আহমেদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক নথিতে জানানো হয়েছে, মিয়ানমার তাদের আপত্তির কথা আদালতকে জানিয়েছে। তবে ঠিক কোন কোন বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতেই এই আপত্তি তুলেছে মিয়ানমার। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ওই মামলায় আদালতে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির সাবেক বেসামরিক নেত্রী অং সান সু চি।

আইসিজে প্রেসিডেন্ট আবদুলকায়ি আহমেদ ইউসুফ জানিয়েছেন, ওই মামলায় গত ২০ জানুয়ারি আপত্তি জানিয়েছে মিয়ানমার। একই সঙ্গে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এসব প্রশ্নের জবাব দিতে আগামী ২০ মে পর্যন্ত সময় পাবে গাম্বিয়া। পরে তা বিবেচনা করে দেখবে আদালত।

মিয়ানমার কোন বিষয়ে আপত্তি তুলেছে তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্ভবত এসব আপত্তির মধ্যে রয়েছে এই মামলা শুনানির এখতিয়ার আদালতের রয়েছে কিনা এবং মামলাটি দাখিলের এখতিয়ার গাম্বিয়ার রয়েছে কিনা সেসব বিষয়।

যুক্তরাজ্যের বার্মা ক্যাম্পেইন এর পরিচালক মার্ক ফারমেনার বলেছেন, ‘এসব আপত্তি ব্যর্থ হবে আর এটা বিলম্ব করার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।’ এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আইসিজে ইতোমধ্যে মিয়ানমারে এখনও থেকে যাওয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে রক্ষায় আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আদেশ দিয়েছে। আর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে দিতে প্রবল আগ্রহী ঢাকা।

তবে এই সপ্তাহে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। রোহিঙ্গা নিপীড়নে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারাই এখন দেশটির ক্ষমতায় আর নির্বাচিত বেসামরিক নেতারা এখন কারাবন্দি।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপ গ্লোবাল জাস্টিস সেন্টার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মৌলিকভাবে এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে আইসিজে’র মামলার সরাসরি কোনও প্রভাব নেই।’ তবে নতুন সেনা সরকার আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে বলে মনে করছে গ্রুপটি।

nupa alam

Recent Posts

আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পর্যটনে বড় অবদান রাখা সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ আন্তর্জাতিকভাবে…

13 hours ago

টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে ১ কেজি ওজনের ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ ফিরোজ আলম (৪৭) নামে একজন…

17 hours ago

পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও…

17 hours ago

ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার ইনানী সৈকতের সাগরে গোসলে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে; এসময় স্থানীয়রা…

1 day ago

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে সকল পেশার, শ্রেণীর, ধর্মের, লিঙ্গের মানুষের…

2 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি জি-থ্রি রাইফেল ও গুলিসহ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা’র এক…

2 days ago