হোয়াইক্যংয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে সাজানো মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

বিশেষ প্রতিবেদক : টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ে ওর্য়াড আওয়ামী লীগের এক নেতাকে সাজানো মামলায় আসামী করায় পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্রের ৭ জনের বিরুদ্ধে মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ই-মেইল ও ডাক যোগে এ অভিযোগপত্রটি প্রেরণ করেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লম্বাবিল তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা ও ভূক্তভোগী ব্যক্তির স্ত্রী আয়েশা আখতার।

তার স্বামী শাহ আলম ওরফে মুল্লুক হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বিগত ইউপি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডের সদস্য পদে (মেম্বার) প্রার্থী ছিলেন।

শাহ আলমের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় গত ১২ এপ্রিল ২০২০ সালের তারিখের দায়ের মামলা ১৬ নম্বর।

আইজিপি বরাবরে প্রেরিত অভিযোগপত্রটি একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ), পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবরেও প্রেরণ করেন তিনি।

অভিযোগপত্রে শাহ আলম ওরফে মুল্লুকের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় দায়ের করা মামলাটি নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক প্রকৃত সত্য উদঘাটনের পাশাপাশি মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন আয়েশা আখতার।

আয়েশা আখতারের দায়ের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত ৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে তার স্বামী শাহ আলম ওরফে মুল্লুক স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পান কতিপয় মাদক কারবারি ইয়াবার বড় একটি চালান পাচার করছে। এরপর তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মূলত ওই ইয়াবার চালানটি মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে মো. ইউনুছ।

আয়েশা বলেন, “আমার স্বামী শাহ আলম এ বিষয়টি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া এলাকার মৃত নিরুজ্জামান সিকদারের ছেলে হারুনর রশিদ সিকদারকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে অবহিত করে। ”

অভিযোগের বরাতে জানা যায়, মাদক পাচারকারি মো. ইউনুছ ইয়াবার চালানটি নিয়ে একটি অটোরিক্সা যোগে কক্সবাজার অভিমুখে রওনা হন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হারুনর রশিদ সিকদার, সোনা মিয়া, মনু মিয়া, মুসলিম মিয়া ও মাসুক শাহরিয়াদ মাসুদ সহ আরো কয়েক ব্যক্তি হোয়াইক্যংয়ের কাটাখালি এলাকায় গাড়ীটি ব্যারিকেড দিয়ে আটকায়। পরে গাড়ীতে থাকা ১ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ছিনিয়ে নিয়ে হারুনর রশিদ সিকদারের বাড়ীতে মজুদ রাখে। পরে তারা ১ লাখ ২০ ইয়াবা সরিয়ে ফেলে জনসমক্ষে ৩০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে বলে প্রকাশ করে।

এর পর ১২ এপ্রিল ইয়াবার চালানের মূল মালিক মো. ইউনুছকে ধরিয়ে দিতে শাহ আলমকে চাপাচাপি দিলে শাহ আলম কৌশলে ইউনুছ এর প্রকৃত তথ্য ও সঠিক ঠিকানা দেয়ার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

আয়েশা অভিযোগ করে বলেন, ১২ এপ্রিল বিকাল ৫ টার পরে সরকারি ত্রাণের কিছু কার্ড বরাদ্ধ দেয়ার তথ্য জানিয়ে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এসআই মশিউর এবং চৌকিদার মোহাম্মদ হোসেন। ওখানে হারুনর রশিদ সিকদার বসা ছিল। ওখানে থেকে শাহ আলমকে টেকনাফ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। হারুনর রশিদ বিষয় তাকে (আয়েশা) ফোন করে জানান কিছু তথ্যের জন্য শাহ আলমকে টেকনাফ থানায় নেয়া হচ্ছে। রাতে মধ্যে তাকে নিয়ে আসা হবে। কিন্তু পরে ২০ হাজার ইয়াবা দিয়ে মো. ইউনুছকে ১ নম্বর আসামী এবং তার স্বামী শাহ আলমের কাছ থেকে ১০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে ২ নম্বর আসামী করে মামলা দায়ের করে। অথচ মামলা ইয়াবা ছিনিয়ে নেয়ার সঙ্গে জড়িত অন্য কাউকে আসামী করা হয়নি। ওই মামলায় শাহ আলম জেল হাজতে রয়েছে।

আয়েশা তার অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানান, সিএনজি চালক মানিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত সকল সত্য প্রকাশ হবে।

nupa alam

Recent Posts

লোকে-লোকারণ্য সমুদ্র সৈকত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের জন প্রিয় স্পট সুগন্ধ পয়েন্ট; যেখানে সারা বছর পর্যটকের…

3 days ago

বাংলাদেশের রাষ্ট্রের যত বড় কর্তাই হউক তাদেরকে জনগনের কাছে জবাবদিহিতা করতেই হবে : সালাহউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাষ্ট্রের যত বড় কর্তাই হউক বা প্রতিষ্ঠান হউক তাদেরকে জনগনের কাছে…

3 days ago

চকরিয়ায় হাতির আক্রমণে নারীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : চকরিয়ায় তামাক চুল্লীতে জ্বালানি দিতে গিয়ে বন্যহাতির আক্রমণে এক নারী নিহত হয়েছে।…

4 weeks ago

টেকনাফে অপহৃত উদ্ধার : অস্ত্র সহ চক্রের ৩ সদস্য আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফে নৌবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে এক অপহৃতকে উদ্ধার এবং তিন…

4 weeks ago

টেকনাফের ‘ডাকাত খায়ের’ সহযোগী নারী সহ গ্রেপ্তার

টেকনাফ প্রতিবেদক : টেকনাফে পুলিশ ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযানে এক নারী সহযোগীসহ কুখ্যাত ডাকাত আবুল…

4 weeks ago