বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে অস্ত্র মামলায় আদালতে এবং আদালত কারাগারে পাঠানো নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীর পরিবার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, যুবলীগ নেতা পিতাকে ঘরে না পেয়ে ২৬ নভেম্বর ভোরে এই শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্র মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।
আর পুলিশ বলছে, ভোরে রাস্তায় অভিযান চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে এই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এসময় তার হাতে থাকা ব্যাগে মিলেছে বিদেশি পিস্তল ও গুলি।
যদিও পুলিশের দায়ের করা মামলার দুই সাক্ষি পুলিশের বক্তব্যের ভিন্ন কথা বলেছেন।
হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীর নাম তাউসিফুল করিম রাফি। তার পিতা হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং উপজেলা যুবলীগের সদস্য রেজাউল করিম। তাদের বাড়ি হ্নীলার দরগাহ পাড়া এলাকার।
শুক্রবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে টেকনাফ থানার পুলিশ।
ঘটনার ব্যাপারে আলাপকালে শুক্রবার রাতেই টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, ২৬ নভেম্বর ভোর ৪ টার দিকে তার নেতৃত্বে এক অভিযানে হ্নীলার দরগাহ পাড়ার নুরুল আমিনের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর ২ জন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আটক করা হয় তাউসিফুল করিম রাফিকে। এসময় তার ডান হাতে থাকা একটি নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভেতর ১ টি বিদেশী পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি, ৪০ রাউন্ড নীল রংয়ের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। সাক্ষিদের উপস্থিতিতে তা জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় তার পিতা রেজাউল করিমের অস্ত্র এটি। তার পিতা তাকে এটি পাশের বাসার নুরুল আমিনের বাড়ির পিছনে লুকিয়ে রাখার জন্য দিয়েছে। এব্যাপারে পুলিশের দায়ের করা মামলায় পিতাকে পলাতক আসামী তরা হয়েছে। শিশুকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত শিশুটিনে কারাগারের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।
ওসি বলেন জানান, মুলত শিশুর রাফির বাবা রেজাউল করিম চিহ্নিত সান্ত্রসী ও ইয়াবাকারবারের সাথে জড়িত। সন্ত্রাসী কাজের জন্য লাইসেন্সবিহীন এই অস্ত্র মজুদ করেছিল।
শিশুর পিতা রেজাউল করিম শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে বলেন, মুলত রাজনৈতিক এবং নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমাকে না পেয়ে আমার শিশু পুত্রকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়েছে। তৌসিফুল করিম রাফি খুবই মেধাবী। সে ২০২১ সালে হ্নীলা প্রি ক্যাডেট স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে ড. গাজী কামরুল ইসলাম বৃত্তি লাভ করে। ২০২১ সালে চতুর্থ শ্রেণীতে হ্নীলা একাডেমি বৃত্তি ও ২০২২ সালে ৫ম শ্রেণীতে জি এইফ এইচ বৃত্তি পায়। চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় আমার পুত্র অংশ নিতে পারলো না।
তিনি এ মামলার সাক্ষি প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার ও মৌলভী জামাল হোসাইনের সাথে আলাপ করার কথা বলেন তিনি।
প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদা আকতার বলেন, ওই দিন মধ্যরাতে পুলিশ তার ঘরে ঢুকে। কোন কথা না বলে ঘরের আলমারী খুলে তকি যেন খুজতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার আলমিরাতে অস্ত্র পেয়েছে বলে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে চলে যায়।
মৌলভী জামাল হোসাইন বলেন, ভোরে মসজিদের যাত্রা দেয়া পথে পুলিশের ওসি তাকে দাঁড় করান। ওই সময় রেজাউলের ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করতে দেখেন। ওসি তাকে জানান অস্ত্র সহ শিশুটিকে আটক করেছে। এরপর এটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। এটা মামলার সাক্ষি কিনা জানিনা।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply