বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

মহেশখালীতে পাচারের জন্য রাখা বিলুপ্তপ্রায় ১২ টি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহেশখালীতে ‘পরিত্যক্ত বসত ঘর’ থেকে পাচারের জন্য রাখে বিলুপ্তপ্রায় ১২ টি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের বারিয়াপাড়ায় এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান, বনবিভাগের মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম এনামুল হক।

তবে পাচারকাজে জড়িতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।

উদ্ধার করা হনুমানগুলোর মধ্যে ৫ টি বাচ্চা এবং ৭ টি প্রাপ্ত বয়স্ক রয়েছে।

এনামুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের বারিয়াপাড়ায় এসময় শাপলাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের পরিত্যক্ত বসত ঘরে বিলুপ্ত প্রজাতির কয়েকটি হনুমান পাচারের উদ্দ্যেশে মজুদ করার খবর পায় বনবিভাগের কর্মিরা। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অবহিত করে বনবিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বনবিভাগের কর্মিরা সন্দেহজনক বসত ঘরটি ঘিরে ফেললে উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারিরা পালিয়ে যায়। এসময় পরিত্যক্ত ঘরে খাঁচায় বন্ধি অবস্থায় বিভিন্ন বয়সী ১২ মুখপোড়া হনুমান পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, মহেশখালীর প্রাকৃতিক বন থেকে পাচারকারিরা এসব হনুমান ফাঁদে পেলে শিকার করেছে। “

বনবিভাগের এ রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, “ পরিত্যক্ত ঘরটির মালিক আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি পরিবার নিয়ে কক্সবাজার শহরে বসবাস করেন। ঘটনাস্থলের পরিত্যক্ত ঘরটির তিনি মালিক হলেও এখন ব্যবহার করেননা। পাচারকারিরা ঘরটিতে লোকজন না থাকা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব হনুমান মজুদ করেছে। “

উদ্ধার করা হনুমানগুলো বিকালেই শাপলাপুর বনবিটের আওতাধীন প্রাকৃতিক বনে অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান এস এম এনামুল হক।

বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলানের তথ্য মতে, দেশের তিন প্রজাতির হনুমানের দেখা মেলে যার মধ্যে একটি হল মুখপোড়া হনুমানের (Hanuman Langur)। বুনো পরিবেশে এদের গড় আয়ু ১৮-৩০ বছর। সাধারণত জুলাই- অক্টোবর বা কোনো-কোনো ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এদের প্রজননকাল। স্ত্রী হনুমান ২০০ থেকে ২১২ দিন গর্ভধারণের পর সাধারণত ১/২টি বাচ্চা প্রসব করে। হনুমানের এই প্রজাতিটি গাছের কঁচিপাতা, শাকসবজি ও ফলমূল, ফুল খায়। তবে বসতবাড়ির কাছাকাছি বসবাস করায় মানুষের খাবারেও এরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তার তথ্যমতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন)-২০১২ অনুযায়ী হনুমানের এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

মহেশখালী উপজেলার সবচেয়ে বেশি পাহাড়ি অঞ্চল শাপলাপুর ও ছোট মহেশখালী। এসব পাহাড়ি এলাকায় এখনো বন্যপ্রাণীর বিচরণ হয়েছে। পাহাড় কাটা এবং বন্যপ্রাণী নিধনের কারণে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য এখন বিলুপ্ত প্রায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888