শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশী ফিশিং ট্রলারে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর গুলিতে নিহত ১, ২৪ ঘন্টা পর ছাড়া হল ৭২ মাঝি-মাল্লা সহ ৬ ট্রলার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশী ফিশিং ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করেছে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ২ জেলে। এই সময় ধরে নিয়ে যাওয়া ৭২ মাঝি মাল্লা সহ ৬ টি ফিশিং ট্রলার ২৪ ঘন্টা পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াই টায় নিহত জেলেকে নিয়ে শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে পৌঁছে আহত ২ জেলে সহ ১১ জন। অপর ৫ টি ফিশিং ট্রলার বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টার দিকে সেন্টমার্টিন ঘাটে পৌঁছে বলে ট্রলার মালিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ঘটনায় শিকার ট্রলার সমুহের মালিক কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দা।

ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এই ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিয়ে জেলে মো. ওসমান গনি শাহপরীরদ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধিন ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২ জেলেও ওই ট্রলারের। তবে তাদের নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ধরে নিয়ে যাওয়া অপর ৫ টি ট্রলার সমুহের মালিক হলেন, শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমানের ২ টি, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ,
তাঁর ভাই আতা উল্লাহ, উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর আড়াই টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে এবং ৬টি বোট জেলেসহ আটক করে। গুলির ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জেলেদের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানান। পরে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট ১ টি ট্রলার সহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার আড়াইটার দিকে নিহত জেলের মরদেহ ও ১১ জন জেলে নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে ফিরেছে। সর্বশেষ তথ্য মতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ৫ টি ট্রলার সহ ৬০ জেলেকে আটকে রাখার খবর ছিল। এর মধ্যে ৫টি ট্রলারও ফিরেছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি খবর নেয়া হচ্ছে।

ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, প্রথমে নিহত জেলে সহ সাইফুলের মালিকাধিন ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপ জেটি আসে দুপুর আড়াই টায়। বিকাল ৪ টায় অপর ৫ টি ট্রলার সহ জেলেরা সেন্টমার্টিন ঘাটে এসেছে। ওখানে জেলেদের সাথে আলাপ করে কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশের নৌ বাহিনী তথ্য সংগ্রহ করছে। সেন্টমার্টিন থেকে ওই ট্রলারও শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে আনা হবে।

ট্রলার মালিক সাইফুল জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ৬ টি ট্রলার সহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে নিয়ে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকাধিন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ ৩ জনের মধ্যে একজন মারা যায়। বৃহস্পতিবার ওই ট্রলারটি ছেড়ে দিয়েছে। নিহত এবং আহত জেলেদের নিয়ে ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপের এসে পৌঁছে আড়াই টায়। ৪ টায় অপর ৫টি ট্রলারও সেন্টমার্টিন এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ দাফন এবং আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন।

শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে ফেরা সাইফুলের মালিকাধিন ট্রলারের মাঝি নুর হামিদ বলেন, গত ৬ অক্টোবর আমি সহ ১২ জন জেলে নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম মৌলভী শিল এলাকায় ১০/১২ টি ট্রলার পাশাপাশি অবস্থান করে সাগরে মাছ ধরতে ছিল। এসময় বুধবার দুপুরে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা একটি স্পীড বোট যোগে এসে গুলি করে তাদের ধাওয়া করে। পরে আটকে মিয়ানমারের নিয়ে যায়। ওখানে গুলিবিদ্ধ একজন মারা যান। আহত হন ২ জন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নিহত ও আহতদের নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। আড়াই টায় ট্রলার নিয়ে শাহপরীরদ্বীপে পৌঁছা সম্ভব হয়েছে।

কোস্টগার্ডের শাহপরীরদ্বীপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। নিহত সহ জেলেরা ঘাটে ফিরেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সাথে আলোচনার পর ৬ টি ট্রলার ছেড়ে দিয়েছে। এব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

টেকনাফে দায়িত্বরত নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবুল কাসেম জানান, সাগরে গুলিতে নিহত জেলের মরদেহ কোস্টগার্ডের পক্ষে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্যকক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888