রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পেল সায়মন বিচ রিসোর্ট ও সায়মন হেরিটেজ টেকনাফে ৫ কোটি টাকার মূল্যের ১ কেজি আইসসহ গ্রেপ্তার ১ পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাত করলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক টেকনাফের পাহাড়ে জেল ফেরত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার টেকনাফে ৭ লাখ টাকা মালামাল নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারি স্থল বন্দরের বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানি কারক সিআইপি ওমর ফারুক টেকনাফের নিকটবর্তী মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত : গুলি আসছে স্থলবন্দর ও আশে-পাশের এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল কাকড়া ও কাছিমের ভাস্কর্য্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাগরলতা বেষ্টিত লাল কাকড়া ও কাছিমের ভাস্কর্য্য। সামুদ্রীক প্রাণীকুলের বিস্ময়কর এবং অদ্ভুদ সৌন্ধর্য্য এ সামুদ্রিক প্রাণী দুটির বিশাল ভাস্কর্য্য কক্সবাজারের মেরিনড্রাইভ সড়কের পেচারদ্বীপে মারমেইড বিচ রিসোর্টে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। সাগর পাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে আকর্ষণীয় ভাস্কর্য্যরে শৈল্পিক সৌন্দর্য্য অবলোকন করে বিমুহিত দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। পাশাপাশি সাগরলতা, লাল কাকড়া ও কাছিমের সুরক্ষা এবং সমুদ্র সৈকত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখাতে সচেতনতা বৃদ্ধির তাগাদা পাচ্ছে পর্যটকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, কক্সবাজার থেকে মেরিনড্রাইভ সড়ক হয়ে পেচারদ্বীপে অবস্থিত মারমেইড বিচ রিসোর্ট। সড়কের পশ্চিম পাশে সবুজ-শ্যামল প্রাকৃতিক পরিবেশে এ রিসোর্ট। নারিকেল গাছ, শিশু গাছ, কৃষœচুড়া গাছ, কাঠ গোলাপ, জবা ফুল সহ নানা প্রজাতির দেশিয় গাছপালায় সবুজ শ্যামল পরিবেশ। গাছ পালার ফাঁকে ফাঁকে নির্মল পরিবেশে ছোট ছোট কক্ষ। কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে তৈরী ইক্যু রিসোর্ট। রয়েছে হরেক রকম পাখির কোলাহল। কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে তৈরী সু-সজ্জিত ক্যাফেতে এক সাথে ২৫০ জনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। সী-ফুডের আইকনিক স্থান মারমেইড এর আরেক বৈশিষ্ঠ হলো দেশি-বিদেশি উন্নতমানের খাবার। যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের খুবই প্রিয়। এ রিসোর্টে বসেই একদিকে পাহাড় ও আরেকদিকে সমুদ্রের অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন আগত পর্যটকরা। পাশাপাশি সাগরলতা বেষ্টিত লাল কাকড়া ও কাছিমের ভাস্কর্য্যরে শৈল্পিকতা অবলোকন করে বিমুহিত হন আগত পর্যটকরা।

মারমেইড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, মারমেইড এর স্বত্তাধিকারী আনিসুল হক চৌধুরী সোহাগ ২০০৫ সালে কক্সবাজারের কলাতলীতে যাত্রা শুরু করেন মিউজিক এন্ড সী-ফুড ক্যাফে নামে প্রতিষ্ঠান দিয়ে। অল্পদিনে গ্রাহকদের উত্তরোত্তর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া এবং এতে স্থান সংকুলন না হওয়ায় পার্শবর্তী আরেকটি স্থানে পরিবর্তন করে মারমেইড ক্যাফে করেন। কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে তৈরি এ ক্যাফেটিতে ১৫০ থেকে ২৫০ জন একসাথে বসে খাবার গ্রহনের সু ব্যাবস্থা আছে।

২০০৯ সালে মেরিন ড্রাইভ সড়কের রেজু ব্রিজ সংলগ্ন পেচারদ্বীপে যাত্রা শুরু করেন মারমেইড ইকো রিসোর্ট। গাছ পালার ফাঁকে ফাঁকে নির্মল পরিবেশে মাটি, কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে ছোট ছোট ২৫টি কক্ষ তৈরি করেন। সর্বোচ্ছ ৩০ ফিট উচ্ছতায় নির্মিত পরিবেশ বান্ধব নির্মল পরিবেশের এ ইকো রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্টে পরিবেশিত সী-ফুড সহ উন্নতমানের খাবার অল্পদিনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জনপ্রিয় হয়ে উঠে। সম্পুর্ণ পরিবেশ বান্ধব ইকো রিসোর্ট স্থাপনের জন্য বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠান মারমেইড ইকো রিসোর্ট এর স্বত্তাধিকারী আনিসুল হক চৌধুরী সোহাগ ২০১১ সালে লন্ডনে এওয়ার্ড পান।

দেশি-বিদেশী পর্যটকদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১৩ সালে পেচারদ্বীপে যাত্রা শুরু করেন আরেকটি রিসোর্ট, নাম; মারমেইড বীচ রিসোর্ট। রয়েছে ৩৫টি কক্ষ, সুইমিংপুল ও সু-পরিসর রেস্টুরেন্ট। মারমেইড বীচ রিসোর্টেই লাল কাকড়া ও কাছিমের ভাস্কর্য্য নির্মান করা হয়েছে। ভাস্কর্য্য দুটির পাশে রয়েছে সাগরলতাও। এ ছাড়াও পেচারদ্বীপে মারমেইড ক্যাফে ও ব্যাংককিয়ান (অথেনটিক থাইফুড) নামে আরো ২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মারমেইড এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সামুদ্রীক প্রাণীকুলের বিস্ময়কর এবং অদ্ভুদ সুন্দর লাল কাকড়া ও কাছিম প্রাকৃতিকভাবে খুবই উপকারি। কাছিম সমুদ্রে ময়লা আবর্জনা ভক্ষন করে পরিচ্ছন্ন রাখেন। কাছিম হাজার মাইল দুর থেকে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকুলের বালিয়াড়িতে এসে ডিম পাড়েন। সামুদ্রিক কাছিম ২০০ মিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রে বাস করছে সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। অতি প্রাচীন এ প্রাণীর অনেক প্রজাতিই এখন বিলুপ্তির পথে।

অপরদিকে সাগরপাড়ের বালিয়াড়িতে লাল কাকড়ার বসবাস। সৈকতে মনোমুগ্ধকর আলপনা আঁকেন কাঁকড়ার দল। যেন অবচেতন মনের কোনো শিল্পীর ক্যানভাস সদৃশ এ দৃশ্য। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তে সৈকতে ঝাকে-ঝাকে লাল কাঁকড়ার সমাহার অনিন্দ্য সৌন্দর্য মন্ত্রমুগ্ধ করে তুলে পর্যটকদের। এ লাল কাকড়া বিশে^র দ্বীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের আরেকটি ঐতিহ্য। জোয়ারের পানিতে বালিয়াড়িতে ভেসে আসা সামুদ্রিক মরা প্রাণী ভক্ষন করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছেন লাল কাকড়া। পরিবেশের উপকারী এ অনিন্দ সুন্দর সামুদ্রিক প্রাণী লাল কাকড়া ও কাছিম রক্ষায় সচেতনতার জন্য এ দুটি ভাস্কর্ষ্য নির্মান করেন মারমেইড কর্তৃপক্ষ।

তিনি জানান, মারমেইড রট, সিমেন্ট, ইট দিয়ে স্থাপনা না করে মাটি, কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে কূড়ে ঘর ধরনের কক্ষ (ইকো রিসোর্ট) তৈরী করা হয়েছে। প্রতিটি কক্ষের চারপাশে দেশিয় নানা প্রজাতির গাছ রোপন করা হয়েছে। সম্পুর্ণ পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের স্থান এখন মারমেইড। মারমেইড এ স্থানীয় জনশক্তিকে কাজে নিযুক্ত ও স্থানীয় মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনে নানা ভুমিকা রেখে আসছেন। এমনকি মানবিক সহায়তাও অব্যাহত রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৩০০ জন কর্মকর্ত-কর্মচারীর মধ্যে ২৭০ জন (৯০ শতাংশ) স্থানীয় জনশক্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888